Logo
Logo
×

সারাদেশ

ঘুমের ট্যাবলেটের ভাগ না পেয়ে ভাইকে হত্যা

Icon

জয়দেবপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ পিএম

ঘুমের ট্যাবলেটের ভাগ না পেয়ে ভাইকে হত্যা

গাজীপুরের সদর উপজেলার মহাসড়কের ডিভাইডার থেকে উদ্ধার হওয়া আবু বক্করের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার সৎভাই হালিমকে গ্রেফতার করেছে জয়দেবপুর থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ঘুমের ট্যাবলেটের ভাগ না পেয়ে হালিম ক্ষোভে কাচের বোতল ভেঙে তার ছোট ভাইকে হত্যা করেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়দেবপুর থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

এ সময় থানার ওসি আব্দুল হালিম, পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

ওসি জানান, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ভোরে জয়দেবপুর থানার বাঘেরবাজার এলাকায় মণ্ডল গার্মেন্টসের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সড়ক বিভাজকের মধ্যে আবু বক্করের (২৫) মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। নিহত আবু বক্কর ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার গরজা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি বাঘেরবাজার এলাকায় তার ভাই হালিমের সঙ্গে থাকতেন। হালিম ভিক্ষাবৃত্তি করত এবং আবু বক্কর বোতল কুড়াতেন (টোকাই)। তারা দুই ভাই মহাসড়কের ফুটওভার ব্রিজের ওপর রাতে ঘুমাতেন।

ওসি আরও জানান, আবু বক্করের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ শুরু করে। বাঘেরবাজার এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করে পুলিশ দেখতে পায়, ঘটনার রাত ৩টা ২২ মিনিটের দিকে এক ব্যক্তি ঘটনাস্থলে প্রবেশ করে। এরপর সিসিটিভির ফুটেজ এবং স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে আবু বক্কর হত্যাকাণ্ডে তার ভাই হালিমকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে হালিমকে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে হালিম জানায়, তার সৎভাই আবু বক্কর ভাঙাড়ি কুড়িয়ে বিক্রি করতেন। আবু বক্কর জুয়া ও নেশায় আসক্ত ছিলেন। মাঝে মধ্যে হালিমের কাছ থেকে টাকাপয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যেতেন আবু বক্কর। আবু বক্কর তার ভাই হালিমকে নির্যাতন করতেন, সম্প্রতি বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে বাম হাত ভেয়ে দেন।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর তারা দুই ভাই ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর আসে। ওই রাত ৮টার দিকে হালিম বাঘেরবাজার ওভারব্রিজের উপরে ভিক্ষা করার সময় আবু বক্কর নেশাদ্রব্য কেনার জন্য তার কাছ থেকে ১শ টাকা নিয়ে চলে যায়। দীর্ঘ সময় পরও আবু বক্কর ফিরে না আসায় হালিম ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে তাকে খুঁজতে বের হয়ে দেখেন যে, আবু বক্কর মণ্ডল ইন্টিমিটস লিমিটেড নামের কারখানার সামনে মহাসড়কের আইল্যান্ডে বসে জুতার গাম জাতীয় নেশাদ্রব্য সেবন করছেন। হালিম কাছে এগিয়ে গেলে নেশা করার জন্য আরও টাকা চান আবু বক্কর। টাকা দিতে না চাইলে হালিমকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারেন আবু বক্কর।

এর একটু পরেই আবু বক্কর নেশার ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। হালিম পাশে থাকা কাঁচের বোতল নিয়ে আইল্যান্ডের লোহার রেলিংয়ের সঙ্গে ভেঙে বোতলের ধারালো অংশ দিয়া আবু বক্করের বুকের বাম পাশে ও বুকের ডান পাশে পাঁজরে এলোপাতাড়ি আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে বাঘেরবাজারের ফুট ওভারব্রিজের উপরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল ৬টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আবু বক্করকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। পরে স্থানীয়রা এসে পুলিশে খবর দেন।

ওসি আরও বলেন, মামলার তদন্তকালে পুলিশ জানতে পারে, আসামি হালিম ঘুমের ২০টি ট্যাবলেটের ভাগ না পেয়ে রাগে ক্ষোভে পাশে থাকা কাচের ধারালো ভাঙা বোতল দিয়ে আঘাত করে তার ভাই আবু বক্করকে হত্যা করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম