নোয়াখালীতে ৩ সন্তানের জননীকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারমিন আক্তার (৩০) নামের ৩ সন্তানের জননীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে নির্যাতনের একটি ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার রাতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে চরজব্বর থানার পুলিশ।
এর আগে, ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবটা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরমজিদ গ্রামের আব্দুল হাদি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিতা শারমিন আক্তার জানান, ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে একই ওয়ার্ডের নুরনবীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। স্বামী শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি ভিক্ষা করে সংসার চালান। তার এক মেয়ের হার্টের সমস্যা থাকায় ৫০ হাজার টাকা দরকার ছিল। এজন্য স্থানীয় কয়েকটি বাজারে ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা জোগাড় করেন। ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে স্বামী পর পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তুলে প্রায় গালমন্দ করতেন তাকে। এভাবে পারিবারিক কলহ দেখা দিলে কিছুদিন আগে কাজের সন্ধানে ঢাকা চলে আসেন তিনি। পরে স্বামীর পরিবারের লোকজনের কথায় পুনরায় বাসায় ফিরে যান তিনি।
শারমিন জানান, গত ১৩ আগস্ট রাতে শ্বশুর বাড়ির পাশের বেলাল সওদাগর নামে এক ব্যক্তি ভরসা দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে প্রথমে তিনি তার সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। এরপর ওই দিন রাত ১২টার দিকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্বশুর আব্দুল হাদি, জা কুলসুমা, নার্গিস, ভাসুরের ছেলে শেখ ফরিদ, হাসান, ভাগনে রাসেল, স্বামী নুরনবী ও তার বোন ছাহেরা খাতুন তার হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায়।
শারমিন বলেন, আমি এতিম, আমার মা-বাবা কেউ নেই। আমার খালাতো ভাইয়েরা আমাকে লালনপালন করে বিয়ে দেন। খবর পেয়ে তারাই আমাকে উদ্ধার করে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নুরনবীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভুঁইয়া বলেন, গৃহবধূর হাত-পা বাঁধা একটি ভিডিও চিত্র এক গণমাধ্যমকর্মী আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছেন। ভিডিও চিত্র দেখে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।