গাড়ি রিকুইজিশনের নামে পুলিশি হয়রানির অভিযোগ, অবরোধের ঘোষণা
সদর দক্ষিণ (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ পিএম
‘কুমিল্লায় গাড়ি রিকুইজিশনের নামে পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সার্জেন্টদের প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অংকের টাকা না দিলে জোর-জবরদস্তি করে গাড়ি রিকুইজিশনে খাটানো হচ্ছে। রিকুইজিশনে অধিকাংশ সময় চালকদের কাটাতে হয় অর্ধাহারে, অনাহারে ও অনিদ্রায়। গাড়ি ভাড়া কিংবা কোনো প্রকার পারিশ্রমিক না পেয়েও টানা ডিউটি করতে বাধ্য করা হচ্ছে চালকদের।’
রিকুইজিশনের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করা না হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মাইক্রো-নোহা রিকুইজিশনের নামে সার্জেন্টদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে বুধবার দুপুর ১২টায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন কুমিল্লা মহানগর দক্ষিণ হালকা মোটরযান মালিক-শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্যে কুমিল্লা মহানগর দক্ষিণ হালকা মোটরযান মালিক-শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কামরুল হাসান রাসেল বলেন, জনস্বার্থ ছাড়া কোনো কাজেই গাড়ি রিকুইজিশন না করতে নির্দেশনা রয়েছে। পাশাপাশি গাড়ি রিকুইজিশনের সময় মালিক বা চালককে হয়রানি না করতেও বলা আছে। রিকুইজিশন করা গাড়ির মালিক বা চালককে বর্তমান হারে গাড়ির ভাড়া পরিশোধ ও গাড়ির কোনো ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ রয়েছে। কোনো নির্দেশনাই মানতে নারাজ কুমিল্লার সার্জেন্টরা। প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা না দিলে জোর-জবরদস্তি করে গাড়ি রিকুইজিশনে খাটানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, সার্জেন্টরা অনেক সময় চালকদের মারধরও করেন। মাসে কয়েকবার গাড়িচালককে পুলিশের রিকুইজিশনের শিকার হতে হয়। পুলিশ গাড়ি রিকুইজিশনের নামে মালিক-চালকদের ওপর এক ধরনের অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। নানা হয়রানির ভয়ে কেউ মুখ ফুটে প্রতিবাদ করতেও সাহস পান না।
কামরুল হাসান রাসেল বলেন, রিকুইজিশনের কথা বলে পুলিশ একবার গাড়ি ধরলেই তিন-চার দিনের জন্য জিম্মি করে রাখে। কোনো দোহাই কাজে লাগে না। পুলিশের একদল গাড়ি থেকে নামে, আরেক দল ওঠে। এর মাঝে গাড়ি কিংবা চালকের কোনো অবসর নেই। মজুরি বা পারিশ্রমিক দূরের কথা একটানা ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অনেকটা অর্ধাহারে-অনাহারে-অনিদ্রায় মানবেতর জীবন কাটাতে হয়। তিন দিন পর একরাশ ক্লান্তি নিয়ে বাসায় ফিরলেও শান্তি নেই। গাড়ি মালিকের প্রতিদিনের ভাড়া ও সংসারের খরচ জোগাতে অসুস্থ শরীরেই রাস্তায় বের হওয়া ছাড়া বিকল্প থাকে না। অথচ পুলিশের এমটি শাখায় রিকুইজিশন করা গাড়ির জন্য বরাদ্দ আসে; কিন্তু ওই বরাদ্দ তারাই ভাগাভাগি করে খায়।
প্রতিবাদ সভায় সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি মো. শাহআলম বলেন, কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছামতো পুলিশ গাড়ি রিকুইজিশন করছে। জনস্বার্থ বা সরকারি কাজে ব্যবহারের কথা বলা হলেও পুলিশ এসব গাড়ি নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ঘুরে। কোথাও এসব ব্যাপারে মুখ খোলা দূরের কথা প্রতিবাদ করলেই মামলাসহ নানা হয়রানিতে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল হাসান বলেন, ভুক্তভোগীরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানালে তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনিয়মের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।