বন্ধুর স্ত্রীর রূপে মুগ্ধ যুবক, অতঃপর...
যুগান্তর প্রতিবেদন, বরগুনা
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ পিএম
বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগ এনে এক যুবকের বিরুদ্ধে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন এক গৃহবধূ। তিনি ওই যুবকের বন্ধুর স্ত্রী। তার রূপে মুগ্ধ হয়ে দিনের পর দিন প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকেন। সঙ্গে দিতেন দামি গিফট।
একপর্যায়ে তারা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে শারীরিক সম্পর্ক। বন্ধুর প্ররোচনায় স্বামীকে তালাক দেন ওই গৃহবধূ। পরে বরগুনা শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাদের অন্তরঙ্গ ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। এ ঘটনার পর ওই গৃহবধূ আদালতে মামলা করেন।
বুধবার ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান খান মামলাটি গ্রহণ করে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার রুজু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামি হলেন বরগুনা পৌরসভার পুলিশ লাইনস সড়কের বাসিন্দা বদিউজ্জামান বনির ছেলে মো. আসাদুজামান রিয়াজ (৩৩)।
জানা যায়, আসামি রিয়াজ ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর বন্ধু। সেই সুবাদে আসামির সঙ্গে তার পরিচয়। তাদের বাসাও পাশাপাশি। আসামি প্রায় সময়ই বাদীর বাসায় আসা যাওয়া করতেন। বিভিন্ন সময় বাদীকে ভালো ভালো গিফট দিতেন। আসামি বন্ধুর স্ত্রীর রূপে মুগ্ধ হয়ে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। বাদী প্রথমে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলেও একপর্যায়ে আসামি রিয়াজের প্রতি দুর্বল হয়ে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। রিয়াজও বাদীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেন। বাদীর স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাদের অসংখ্যবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। রিয়াজ বাদীকে তার স্বামীকে তালাক দিতে বলেন।
বাদী বলেন, আমি রিয়াজের কথামতো আমার স্বামীকে গত ১৪ জানুয়ারি তালাক দেই। স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর রিয়াজ আমাকে বরগুনা পৌরসভার আমতলাপাড় সড়কে একটি বাসা ভাড়া করে দেয়। ওই বাসায় রিয়াজ নিয়মিত এসে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। প্রতিবেশীরা জানতেন আমরা স্বামী-স্ত্রী।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা অনুমান ৭টার দিকে নিত্যদিনের মতো রিয়াজ ভাড়া বাসায় আসেন। আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলে আমি রিয়াজকে বলি কাজি ডেকে এনে আগে বিয়ে কর। তারপর যা ইচ্ছা তাই করবে। রিয়াজ বলে এখন বিয়ে করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। একপর্যায়ে রিয়াজ আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে চলে যায়। রিয়াজ যাবার সময় আমাকে বলে যায় আর বিয়ে করবে না। এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে ধর্ষণ করার গোপন ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে। আমি মনে করেছি রিয়াজ আমার সঙ্গে রাগ করে এমন আচরণ করছেন। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না রিয়াজ আমাকে এমনভাবে ব্ল্যাকমেইল করবে। আমি রিয়াজকে ফোন করলে রিসিভ করে না। অবশেষে আমি বরগুনা থানায় ২১ সেপ্টেম্বর রাতে রিয়াজের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাই। থানা আমার মামলা গ্রহণ করেনি।
এদিকে রিয়াজের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বরগুনা থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, এ ব্যাপারে বাদী কিংবা অন্য কেউ থানায় মামলা করতে আসেনি। মামলা করতে এলে অবশ্যই মামলা নিতাম।