Logo
Logo
×

সারাদেশ

জিএম কাদেরের মামলা প্রত্যাহার দাবিতে সংগঠিত হচ্ছে জাতীয় পার্টি

Icon

মাহবুব রহমান, রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ পিএম

জিএম কাদেরের মামলা প্রত্যাহার দাবিতে সংগঠিত হচ্ছে জাতীয় পার্টি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবির আন্দোলন তীব্র হতে শুরু করেছে। দলটির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রংপুর অঞ্চলে ইতোমধ্যেই নতুন করে সংগঠিত হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। গ্রহণ করা হয়েছে আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মপরিকল্পনা।

সোমবার বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে দলটির রংপুর মহানগর ও জেলার নেতাকর্মীরা। তা না হলে রংপুর নগরীসহ রংপুর অঞ্চলকে অচল করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের নামে একটি মামলা দায়ের হয়। সেই মামলা দায়েরের পর থেকে দলটির তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন নেতাকর্মীরা।

ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ডিসির মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এসব সমাবেশ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি উঠেছে।

এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রংপুর অঞ্চলে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকেই মনে করেন রাজনৈতিক হয়রানির করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ও দলের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে দলের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে দলের অস্তিত্ব জানান দিতে রংপুর অঞ্চলে নতুন করে সংগঠিত হতে শুরু করে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তারা ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা ও জেলায় জেলায় কর্মতৎপরতা জোরদার করেছেন।

ইতোমধ্যেই রংপুর বিভাগের নীলফামারী, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, উলিপুর এবং রংপুর মহানগর ও জেলায় বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসব কর্মসূচি থেকে দ্রুত মামলা প্রত্যাহার করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেন নেতাকর্মীরা। অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।

তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানান, ছাত্রদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নেওয়ার জন্য জাতীয় সংসদে দাবি উপস্থাপন করেন জিএম কাদের। পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি দলগতভাবে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন প্রদান করে এবং ছাত্রদের মুক্তিসেনা হিসেবে উল্লেখ করেন। শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জাতীয় পার্টি জানিয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে ছাত্রদের আন্দোলনে সহযোগিতা করেছেন। শুধু তাই নয় রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় ছাত্র সমাজ, জাতীয় যুব সংহতি ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। তাদের অনেকেই আহত হয়েছেন; কিন্তু ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর একটি মহল শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে জাতীয় পার্টিকে মিথ্যা ও মনগড়া অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে ঘিরে ষড়যন্ত্রমূলক অপরাজনীতিও করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে বিগত সরকার জাতীয় পার্টির বহু নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছিল। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও জাতীয় পার্টি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে।

নেতাকর্মীরা বলছেন, রংপুরে জাতীয় পার্টির ইতিহাসটা কী সেটা জানা দরকার। এখানে জাতীয় পার্টি কী করতে পারে, কী করতে পারে না। আমরা শান্তিপূর্ণ দল, আমরা মারামারি, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ পছন্দ করি না। এটা আপনাদের জানা থাকা দরকার। আমরা চাই না সেরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক।

জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির বলেন, আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা রংপুরের মানুষ কী করতে পারি তা অতীতের ইতিহাস বলে দেয়। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই। তা না হলে রংপুরের মানুষকে সাথে নিয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলনে রংপুর অচল করে দেওয়া হবে।

কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলার সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা সহনশীলতা দেখিয়ে আসছি। তার মানে এই নয় জাতীয় পার্টি দুর্বল হয়ে পড়েছে। জাতীয় পার্টি এখনো সুসংগঠিত আছে। আমরা সরকারকে জানান দিয়েছি মিথ্যা মামলা দিয়ে জিম্মি করা যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না।

এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, রংপুর মহানগর সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, রংপুর হচ্ছে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি। পল্লীবন্ধু এইচএম এরশাদকে এ অঞ্চলের মানুষজন এখনো মনেপ্রাণে ভালোবাসেন। অতীতের মতো জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। রংপুর অঞ্চলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ সবসময় প্রস্তুত সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য।

তিনি বলেন, সোমবার আমরা রংপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। ডিসির মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছি। ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়ে বলেছি মামলা প্রত্যাহার করতে। নইলে আপনারা বুঝতে পারবেন, জাতীয় পার্টি কী জিনিস। আমরা সেদিকে যেতে চাই না। আমরা চাই জিএম কাদের এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা হোক। সেটা যদি না করেন, তাহলে আবার ১৫ দিন পরে আপনাদের সঙ্গে আমাদের দেখা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম