Logo
Logo
×

সারাদেশ

ব্যবসায়ীকে হত্যার দেড় মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

Icon

ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১৩ পিএম

ব্যবসায়ীকে হত্যার দেড় মাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভিটাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মিঠু ফকির স্থানীয় দ্বন্দ্বের জেরে খুন হন গত এক মাস আগে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। এ ঘটনার ১ মাস ১৮ দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের আদেশে কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। 

গত ৫ আগস্ট গভীর রাতে রফিকুল ইসলাম মিঠু ফকিরসহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। প্রথমে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হলে ৬ আগস্ট রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিঠু ফকির মারা যান। ৭ আগস্ট বিকালে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ ঘটনার পর গত ১৬ আগস্ট নিহত রফিকুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী পলি আক্তার বাদী হয়ে অভিযুক্ত হামলাকারী ১১ জনের বিরুদ্ধে ভাণ্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পিরোজপুর আমলি আদালত-২ এর বিচারিক হাকিম সাদিক আহম্মেদ গত ২ জুলাই এক আদেশে ঘটনার এক মাস ১৮ দিন পর সোমবার পুলিশ রফিকুল ইসলাম মিঠুর লাশ পারিবারিক কবরস্থান থেকে উত্তোলন করেন।

এ সময় পিরোজপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌফিক আনোয়ার, ভাণ্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কামাল হোসেন, স্থানীয় ভিটাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান খান এনামুল করিম পান্নাসহ থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।

থানা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ভাণ্ডারিয়া ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ভিটাবাড়িয়া গ্রামের মো. মোশাররফ ফকিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম মিঠু ফকির ঢাকার নবাবপুর এলাকায় ব্যবসা করত। মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়িতে আসতেন। ঘটনার কয়েক দিন পূর্বে সে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় জেলেপাড়ার একটি দ্বন্দ্বের জেরে গত ৫ আগস্ট রাতে জেলেপাড়ার ৩০ থেকে ৪০ জনে একটি সংঘবদ্ধ দল তাকেসহ মোট ৪ জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। অন্য আহতরা বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহতরা হলেন- মো. ছোমেদ তালুকদারের ছেলে বাশার তালুকদার, আলী হোসেন তালুকদারের ছেলে মো. ছালাম তালুকদার, মো. সাঈদ তালুকদারের ছেলে হাসিব তালুকদার। অপরদিকে গুরুতর আহত রফিকুল ইসলাম ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার পরদিন মারা যান।

নিহতের বোন নাজমা বেগম জানান, ওই সময় দেশের পরিস্থিতি সংকটময় থাকার কারণে থানা পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় নিহতের ময়নাতদন্ত করানো সম্ভব হয়নি। পরে লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, তার ভাই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। এলাকার দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সুযোগে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার দাবি করছি।

নিহত রফিকুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী পলি আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ওই সময় দেশের পরিস্থিতির কারণে থানা পুলিশ না পেয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়েছে। পরে আমি গত ১৬ আগস্ট স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে মামলা দায়ের করেছি।

তিনি বলেন, আমার তিন মেয়ে এখন পিতৃহারা। আমি স্বামী হারা। মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধের পথে। আমি আমার স্বামী হত্যাকারীদের কঠোর বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা ভাণ্ডারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. সোলায়মান ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের নির্দেশে নিহত রফিকুলের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য এক মাস ১৮ দিন পর কবর হতে উত্তোলন করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম