যশোরের বাঘারপাড়ায় পুকুরে ভাসমান পাঁচ বছর বয়সি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পানিতে ডুবে মৃত্যু সন্দেহে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ নিতে চেয়েছিলেন স্বজনরা। কিন্তু সুরতহাল প্রতিবেদন করার সময় মেয়েটির ঠোঁটে ছোট্ট দাগ দেখতে পায় পুলিশ। পরে লাশটি দাফনের অনুমতি না দিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। 

দুই মাস পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে জানা গেছে, ধর্ষণের পর শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর শিশুটির বাবা যশোরের বাঘারপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। মামলায় আসামি অজ্ঞাত উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানায় পুলিশ।

জানা গেছে, গত ২০ জুলাই যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দক্ষিণ শ্রীরামপুর গ্রামের বাড়ির পাশে খেলার সময় নিখোঁজ হয় পাঁচ বছর ছয় মাস বয়সি মেয়েটি। পরদিন বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় শিশুটির লাশ উদ্ধার করেন স্বজনরা। পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ভেবে স্বজনেরা লাশের ময়নাতদন্ত করতে চাননি। তবে শিশুটির ঠোঁটে ছোট দাগ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশ শিশুটির লাশ দাফনের অনুমতি না দিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। 

প্রায় দুই মাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন থানায় আসে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ভাসমান লাশ উদ্ধার হওয়ায় শিশুটির পরিবারের লোকজন কাউকে সন্দেহ করেনি। পুলিশের সিদ্ধান্তে ময়নাতদন্ত করা হয়।

লাশ উদ্ধারের পর অপমৃত্যুর মামলার এজাহারে মেয়েটির বাবা উল্লেখ করেন, গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টা থেকে তার ছোট মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন সকালে পুকুরের এক কোণায় মেয়ের লাশ ভাসতে দেখেন।

শিশুটির বাবা বলেন, আমার মেয়েকে যে বা যারা পাশবিক নির্যাতন করে হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।

বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকিবুজ্জামান বলেন, নিহত শিশুটির ঠোঁটে ছোট একটি দাগ ছিল। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করার সময় দাগটি পুলিশের নজরে আসে। দাগটি দেখে সন্দেহ হয়। এ কারণে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শিশুটিকে ধর্ষণের পর গলা, নাক ও মুখ চেপে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শিশুটির বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।