Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাঙ্গাবালীতে সালিশ নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পিএম

রাঙ্গাবালীতে সালিশ নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশত

সালিশ বৈঠককে কেন্দ্র করে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে দুইপক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে স্থানীয় বিএনপির কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বসতঘর।

মঙ্গলবার রাতে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেষ্টিন বাজারে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটে।

পরে রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও নৌবাহিনীর রাঙ্গাবালীতে দায়িত্বরত কন্টিনজেন্ট কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মহসিন কবির মৃধার নেতৃত্বে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে বুধবার বিকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় রাঙ্গাবালী থানায় কোনো অভিযোগ কিংবা মামলা দায়ের করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকালে চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেষ্টিন গ্রামসংলগ্ন মাঝেরচর এলাকায় এক জেলে ট্রলারে কাজ করা তিন জেলে শ্রমিকের বেতন না দেওয়া নিয়ে সালিশ বৈঠক বসানো হয়। সেখানে ট্রলার মালিকপক্ষ এবং তিন জেলে শ্রমিকের বিরোধ মীমাংসা করতে আলাদা আলাদাভাবে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের লোকজন হাজির হয়। এতেই হট্টগোল বাধে। ছাত্রদল-ছাত্রলীগের লোকজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।

এ ঘটনার জেরে সন্ধ্যায় চরবেষ্টিন বাজারে গিয়ে বিএনপির স্থানীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে ছাত্রলীগের ওই কর্মীরা। সঙ্গে যুক্ত হয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। খবর পেয়ে বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বাজারে এলে তাদের সঙ্গে হট্টগোল বাধে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের। শুরু হয় সংঘর্ষ। পরে রাজনৈতিক এ সংঘর্ষ হঠাৎ ভিন্নভাবে রূপ নেয়। চরবেষ্টিন এবং পাশের গ্রাম চররুস্তুমের মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চরবেষ্টিন বাজারের একপ্রান্তে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ, আরেক প্রান্তে ২ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ অবস্থান নিয়ে দুই প্রান্ত থেকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ দফায় দফায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলতে থাকে। পরে রাত ১০টার দিকে যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। যৌথবাহিনীর খবর পেয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতকারীরা। তবে এখনো ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।

স্থানীয় সূত্রের তথ্যমতে, এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়। গুরুত্র আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী উপজেলা গলাচিপা ও জেলা শহর পটুয়াখালীতে পাঠানো হয়।

সংঘর্ষে আহত চরমোন্তাজ ইউনিয়ন আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার ফজলুর রহমান বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু লোকজন বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। ব্যাপক লোকজন আহত হয়। আমি নিজেও ইটের আঘাতে আহত হয়েছি।

উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চরমোন্তাজ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, চরবেষ্টিন বাজারের অবস্থিত ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি কার্যালয় অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে আওয়ামী লীগের লোকজন। তারা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা এবং দোকানপাটও ভাঙচুর চালায়। ওই এলাকায় বর্তমানে আওয়ামী লীগের লোকজন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় কেউ এখনো অভিযোগ কিংবা মামলা করেনি। মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষে ৪০ জনের মতো আহত হয়েছে। ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং দুইটি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জেনেছি। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আমি নৌবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। যৌথবাহিনী আসার খবর পেয়ে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম