আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বিজয়নগর উপজেলা শাখা দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের ব্যবস্থাপনায় উপজেলার চম্পকনগর মোড় থেকে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‍্যালি বের করার উদ্যোগ নেয়। এ সময় তৌহিদী ছাত্র জনতার নামে কিছু কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক জশনে জুলুস প্রতিহতের নামে বাঁধা দিলে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

সোমবার সকালে মিছিলের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় উপস্থিত অন্তত ২০ জন আহত হয়। এনিয়ে পুরো উপজেলাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর জাতীয় মিলাদ কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ সুফি সৈয়দ নাঈম উদ্দিন আহমেদ বলেন, উচ্ছৃঙ্খলতা করে কল্যাণকর মানুষ হতে পারে না।

গুরুত্বর আহতরা হলেন- মো. কামাল হোসেন (৪২), মো. এনাম খাঁ (৪০), মো. রফিক (৩২) মাওলানা ফয়সাল (২২), মনা মিয়া (৩০), জুনাইদ (১২), হুসাইন (১৩), অহিদ (৪৫), আব্দুলা (১৪), মাছুম (১৩), রুহুল আমিন (১৮), আব্দু সালাম (৪৮)।

সংঘর্ষের পর আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বিজয়নগর উপজেলা শাখার আয়োজনে দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের ব্যবস্থাপনায় উপজেলার চম্পকনগর মোড় থেকে ঈদে মিলাদুন্নবীর র‍্যালি শুরু হয়ে বিজয়নগর মির্জাপুর মোড়ে এসে শেষ হয়।

র‌্যালি শেষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের পির, জাতীয় মিলাদ কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ সুফি সৈয়দ নাঈম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ইসলাম শান্তি প্রিয় একটি ধর্ম, যে ধর্ম সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। সেই ধর্মের নামে যদি কেউ উচ্ছৃঙ্খলতা করে তারা কখনো ধর্মের কল্যাণকর মানুষ হতে পারে না। আজকে যারা পবিত্র ঈদে ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিলে বাঁধা দিয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তারা শান্তি বিনষ্টকারীরা। এই গোষ্ঠীকে শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে।

তিনি প্রশাসনের কাছে আজকের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে বলেন, এই ঘটনার বিচার না করলে শান্তিপ্রিয় জনতা তার মোকাবেলা করার ক্ষমতা রাখে। তাই আশা করব প্রশাসন বিষয়টি শক্ত হাতে দোষীদের বিচার করে এ আক্রমণের বিচার করবে।

সোমবার সকাল ৯টার দিকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বিজয়নগর উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দের নেতৃত্বে এই মিছিলে হাজার হাজার আশেকে রাসুল কালেমা তাইয়েবাখচিত পতাকা নিয়ে অংশ নেন।

র‍্যালি শেষে আল হাসান ওয়াল হোসাইন (আঃ) সুন্নিয়া হাফিজা মাদ্রাসা মাঠে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের যুব সংগঠন বিজয়নগর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. দুলাল আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- দৌলতবাড়ি দরবার শরিফ কমিটির মহাসচিব সৈয়দ মাইন উদ্দিন আহমেদ জুম্মান, দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের সাহেবজাদা সৈয়দ ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ, আল্লামা সৈয়দ আখলাক উদ্দিন আহমেদ, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বিজয়নগর উপজেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা লোকমান হোসাইন, দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা রায়হান উদ্দিন মোল্লা প্রমুখ।

আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত বিজয়নগর উপজেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক মো. আব্দুল হামিদ, যুব কমিটির প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের ছাত্র সংগঠনের বিজয়নগর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মহিউদ্দিন রুবেলের নেতৃত্বে দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের নির্ধারিত কয়েকশ স্বেচ্ছাসেবক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিজয়নগর থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ঈদে মিলাদুন্নবীর র‍্যালি নিয়ে যাওয়ার পথে চম্পকনগর মাদ্রাসা মোড় অতিক্রম করার সময় হেফাজত ইসলামের কিছু লোক হঠাৎ র‍্যালির একজনকে হামলা করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পুলিশ তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।