চট্টগ্রামে অস্ত্র জমা দেননি আ. লীগের প্রভাবশালী নেতারা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ পিএম
চট্টগ্রামের সাবেক মন্ত্রী ও এমপিসহ অনেকে এখনও আগ্নেয়াস্ত্র জমা দেননি। সরকারের নির্দেশনার পর এখনও পর্যন্ত ১৪৬টি অস্ত্র থানা বা জেলা প্রশাসনে জমা পড়েনি। যারা লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দেননি তাদের বিরুদ্ধে চলতি সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সদ্য যোগদান করা জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
তিনি বলেন, যারা সময়সীমার মধ্যে অস্ত্র জমা দেননি তাদের অস্ত্রের আর বৈধতা নেই। এসব অস্ত্র এখন অবৈধ হয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৪২টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। এর প্রায় সবই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দেওয়া হয়েছিল। ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেসব অস্ত্রের ৬৯৬টি জমা পড়েছে। বাকি ১৪৬টি অস্ত্র এখনও জমা দেয়নি। যারা অস্ত্র জমা দেয়নি তাদের বেশিরভাগই পলাতক কিংবা আত্মগোপনে রয়েছেন।
যারা অস্ত্র জমা দেননি তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তার নামে দুইটি লাইসেন্স করা অস্ত্র রয়েছে। এর একটি পিস্তল ও অন্যটি শটগান। অস্ত্রগুলো এখনও জমা পড়েনি। সীতাকুণ্ডের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আল মামুনের নামে রয়েছে একটি পিস্তল। এটি জমা দেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের দুই ছেলে মীরসরাই’র সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমান রুহেল ও তার বড় ভাই সাবেদ উর রহমানের পিস্তল জমা দেওয়া হয়নি। চট্টগ্রাম -১৬ (বাঁশখালী) সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নামে পিস্তল ও একনলা বন্দুকের লাইসেন্স রয়েছে। তিনি অস্ত্র দুইটি এখনও জমা দেননি। চট্টগ্রাম-১৫(সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর নামেও দুটি অস্ত্রের লাইসেন্স আছে। সেই শটগান ও পিস্তলও জমা পড়েনি। ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনির নামে একটি পিস্তল লাইসেন্স করা থাকলেও সেটা থানায় জমা পড়েনি।
বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র সেলিমুল হক চৌধুরীর নামে লাইসেন্স করা একনলা বন্দুকও জমা দেওয়া হয়নি। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর একনলা বন্দুকটিও জমা পড়েনি।
রাউজান উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন চৌধুরীর নামে লাইসেন্স করা শটগান ও পিস্তল জমা পড়েনি।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম যুগান্তরকে জানান, বৃহস্পতিবার যোগদান করে কয়েক ঘন্টা অফিস করেছি। তবে এটুকু বলতে পারি যারা সরকারের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে অস্ত্র জমা দেননি, তাদের ব্যাপারে আগামী সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।