Logo
Logo
×

সারাদেশ

সোয়া ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগবিহীন সেতু

Icon

মো. মোরশেদ আলম, গাজীপুর

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ পিএম

সোয়া ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগবিহীন সেতু

তুরাগ নদের ওপর নির্মিত ১৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুর পূর্বপাশে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের খাইলসাবর্তা, অন্যপাশে কালিয়াকৈর উপজেলার সাকাশ্বর বাজার।  সোয়া ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় সেতুটি; কিন্তু এটি নির্মাণের ৬ বছর হয়ে গেলেও হয়নি সংযোগ সড়ক।  এতে ভোগান্তিতে রয়েছেন আশপাশের ১০-১২টি গ্রামের মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০১৭ সালের জানুয়ারির শেষদিকে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করে। ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। ব্যয় হয় ৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। প্রায় আটশ মিটার সংযোগ সড়ক ছাড়াই সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সংযোগ সড়কের জন্য দরপত্র অনুমোদন হলেও কাজটি আটকে আছে। সেতুটি দিয়ে পারাপার হওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা ভারি বস্তা ফেলে হাঁটার ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। কিন্তু এই পথ দিয়ে সেতুতে উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়। ঝুঁকি নিয়ে সেতুর একপাশ দিয়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে এসব গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচল করতে হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, ১০ মিনিটের রাস্তা অথচ সংযোগ সড়ক না থাকায় সময় লাগছে ১ ঘণ্টার বেশি। সংযোগ সড়কটি হলে সাধারণ মানুষ গাড়ি, ভ্যানরিকশা নিয়ে ওই সেতু দিয়ে চলাচল করতে পারত। এতে ঝুঁকির পাশাপাশি সময় অপচয়ও এড়ানো যেত। অনেক সময় স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও বয়স্ক মানুষ ব্রিজে উঠতে গিয়ে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা বলেন, মাস্টারবাড়ি-খাইলসাবর্তা-সাকেশ্বর সড়কে তুরাগ নদের ওপর নির্মিত সেতুর নাম দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী সামসুল হক ব্রিজ। খাইলসাবর্তা মৌজার পুরো অংশজুড়ে ফসলি জমি। সেতু নির্মাণের পূর্বে মানুষের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন ছিল নৌকা। সেতু হওয়ায় নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন কৃষক ও আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করছে। সেতুতে ওঠার রাস্তা ভাঙাচোরা, উঁচু ও ঝুঁকিপূর্ণ। বয়স্ক, নারী ও শিশুদের অন্যের সহযোগিতায় সেতুতে উঠতে হয়। এতে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে।

সাকেশ্বর এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল হোসেন বলেন, ব্রিজের সঙ্গে সংযোগ সড়ক না থাকায় ১০-১২টি গ্রামের লাখো মানুষের ভোগান্তি। সবচেয়ে বেশি সমস্যা কৃষক ও স্কুল পড়ুয়া নারী শিক্ষার্থীদের। বেশ কয়েকবার রাস্তা হওয়ার গুঞ্জন উঠলেও আবার অজানা কারণে সড়ক নির্মাণ হয় না। এলাকাবাসী মেয়র কাউন্সিলরের কাছে বহুবার গিয়েও কোনো সুনির্দিষ্ট আশ্বাস পায়নি।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ৪২ কোটি টাকার একটি প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছিল কিন্তু সড়কটি হয়নি। এরপর কী অবস্থায় আছে ট্রেন্ডারটি সেটিও আর জানতে পারেনি। তবে রাস্তাটা হওয়া খুবই প্রয়োজন; এতে আমাদের কালিয়াকৈরে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হবে এলাকার মানুষের কষ্ট কমে যাবে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন জোন-৫এর প্রকৌশলী একেএম হারুনুর রশীদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। এ কথা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম