পুলিশের ছোড়া ১৭৩ সিসা বুলেট শরীরে বহন করছে রাব্বি
মো. নুরুজ্জামান, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ পিএম
বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত হন সাদিকুল ইসলাম রাব্বি। ঘটনার দিন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাননি তিনি। পরে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ভর্তি হলে পুলিশের ভয়ে সেখান থেকেও তাকে শিবালয়ের উথুলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সেখান থেকে ৪ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন রাব্বি। বর্তমানে তার শরীরে এবং মাথায় ১৭৩টি সিসা বুলেট রয়েছে।
আহত রাব্বির বাবা মারা যাওয়ার পর তাদের সংসারে তিনি ছাড়া আয় করার মতো কোনো লোক নেই। এমতাবস্থায় তার ওপর পুলিশের নির্যাতন। মা বোন আর স্ত্রী এবং ৭ মাসের শিশুকন্যা নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন আহত রাব্বি। এক মাস পেরিয়ে গেলেও সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না আহত রাব্বি।
গত ৪ আগস্ট বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মানিকগঞ্জ ল কলেজ এলাকায় পুলিশের শটগানের বুলেটে আহত হন সাদিকুল ইসলাম রাব্বি।
তিনি সদর উপজেলার দিঘি ইউনিয়নের বাটভাউর এলাকার মৃত রফিকুল ইসলাম ছেলে।
আহত সাদিকুল ইসলাম রাব্বি বলেন, গত ৪ আগস্ট দুপুরে ল কলেজ এলাকায় পুলিশ আমার উপর শটগান দিয়ে গুলি ছোড়ে। আমাকে আহত অবস্থায় মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ আমাকে চিকিৎসা না দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করে দেয়। পরে বিকালে আমি মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হই। ওই হাসপাতালে রাত ১১টার পর পুলিশ তল্লাশি চালায়। পরে কোনোভাবে মুন্নু হাসপাতাল থেকে বের হয়ে উথুলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ৪ দিন চিকিৎসা নেই। শরীর থেকে অনেক বুলেট অপারেশন করে বের করা হয়েছে। বর্তমানে আমার শরীরে ১২২টি এবং মাথায় ৫১টি সিসা বুলেট রয়েছে। অপারেশন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমি ছাড়া আমার সংসারে আয় করার মতো কোনো লোক নেই। মা বোন আর আমার স্ত্রী এবং ৮ মাসের শিশুকন্যা নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। আমাকে নিয়ে এখন রাজনীতি চলছে। অথচ চিকিৎসা করানোর মতো কোনো উপকার পাচ্ছি না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ওমর ফারুক বলেন, গত ৪ আগস্ট পুলিশ রাব্বির উপর শটগান দিয়ে গুলি করে। এতে আহত হন রাব্বি। আমি তার চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে দিয়েছি। তার শরীরে বর্তমানে অনেক বুলেট রয়েছে। অপারেশন করতে ব্যয়বহুল খরচ হবে। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সবাই তার পাশে আছি। খুব শিগগিরই আওয়ামী লীগের দোসরদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে তিনি জানান।
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, তার চিকিৎসার জন্য আমাদের একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।