চাঁদা না পেয়ে ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, স্ত্রী গুরুতর আহত

বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩০ পিএম

বগুড়া শহরে ১০ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা আকুল হোসেন রানা (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। এ সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত তার স্ত্রী রোজিনা বেগমকে (৩৮) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মধ্যরাতে শহরের পশ্চিম জয়পুরপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
বুধবার সকালে ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রেদওয়ানুর রহিম জানান, মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের ভাতিজা মর্তুজা জানান, নিহত আকুল হোসেন রানা বগুড়া শহরের পশ্চিম জয়পুরপাড়ার মৃত আজিজার রহমানের ছেলে। তিনি পেশায় লোহার ব্যবসায়ী ছিলেন। গত রোববার রাতে রানা কর্মস্থল থেকে রিকশায় বাড়ি ফেরেন। বেশি ভাড়া চাওয়া নিয়ে রিকশাচালকের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় এলাকার ইনসানসহ কয়েকজন বখাটে রানার পক্ষ নিয়ে রিকশাচালককে মারধর করেন। পরে ওই রিকশাচালক তার স্বজনদের নিয়ে এলাকায় আসেন এবং তাকে মারপিটকারী ইনসান ও অন্যদের পালটা মারধর করেন।
এদিকে রিকশাচালককে মারধর করায় তার স্বজনদের পালটা মারপিটের শিকার ইনসান ও অন্যরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে ব্যবসায়ী রানার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বখাটেরা তার ওপর ক্ষুব্ধ হন।
মঙ্গলবার বোনের বাড়িতে পারিবারিক অনুষ্ঠানে রানা ও তার স্ত্রী রোজিনা বেগম অংশ নেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে রাত ১২টার দিকে তারা রিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন। রিকশা থেকে নেমে তারা হেঁটে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় চাঁদা না পেয়ে ক্ষুব্ধ বখাটে ইনসান ও তার সঙ্গীরা রানা এবং স্ত্রী রোজিনাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনরা রক্তাক্ত ওই দম্পতিকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসকরা রানাকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত রোজিনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফুলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রেদওয়ানুর রহিম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদা না পেয়েই দুর্বৃত্তরা ওই দম্পতিকে ছুরিকাঘাত করেছে। নিহত ব্যবসায়ী রানার মরদেহ শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সদর থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, তাদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।
এ নিয়ে সোমবার রাত ৯টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত গত ২৭ ঘণ্টায় বগুড়ায় তিনটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।
আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জেরে গত সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরতলির গোকুল বাজার এলাকায় সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় হামলাকারী প্রতিপক্ষ যুবদল কর্মী সানোয়ার হোসেন লেদোকে আটক করে মারপিট করা হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে পাঠায়। রাত ১১টার দিকে মিজানের লোকজন জরুরি বিভাগে ঢুকে ভাঙচুরের পর লেদোকে সেখানে পিটিয়ে হত্যা করেন। তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জনগণের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।