খুন করে ভারতে পালানোর সময় যুবক আটক
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩১ এএম
রৌমারীতে খালুকে খুন করে ভারতে পালানোর সময় নূর আলম নামের এক যুবককে আটক করেছে ভারতীয় বিএসএফ। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ওই যুবককে ফেরত দেওয়া হয়। পুলিশ লাশ ও খুনিকে থানায় নিয়ে আসে।
মঙ্গলবার ভোরে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কাউনিয়ারচর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত বৃদ্ধের নাম বশির উদ্দিন (৮২)। তিনি উত্তর কাউনিয়ারচর গ্রামের হেশকারী শেখের ছেলে। আটক যুবকের নাম নুর আলম (৩০)। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ থানা এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী বশির উদ্দিন সম্পর্কে নুর আলমের খালু। কয়েক দিন ধরে খালুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন নুর আলম।
নিহত বশিরের মেয়ে মাহমুদা আক্তার বলেন, কাজের সুবাদে নুর আলম ভারতে থাকে। সেখান থেকে সে বৈধ এবং অবৈধপথে বাংলাদেশে যাতায়াত করত। দুই সপ্তাহ আগে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে নুর আলম রৌমারীর উত্তর কাউনিয়ারচর গ্রামে আসে। সেখানে কয়েক দিন থাকার পর ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে যায়। গত ৪ দিন আগে তার মাকে নিয়ে আবার কাউনিয়ারচরে বশিরের বাড়িতে বেড়াতে আসে। রাতে অসুস্থ বশিরের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাত। সোমবার ভোরে সে বশিরকে মেরে সীমান্ত পথে পালিয়ে যায়। তবে কী কারণে সে বশিরকে মেরেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি নিহতের পরিবার।
মাহমুদা আক্তার বলেন, নুর আলমের কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল। সে অসুস্থ কিনা সেটাও ঠিক জানি না। গত দুই রাত থেকে সে আমার বাবার সঙ্গে থাকছিল। রাতে ঘুমায় না। সোমবার রাত ১টার দিকেও আমি দেখে গেছি বাবা ভালো আছেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে নুর আলম চিৎকার করে বলছে, খালু মারা গেছে। আমরা এসে দেখি বাবার শরীরে রক্ত। আমরা তাকে আটকানোর চেষ্টা করি। কিন্তু নুর আলম ঘুসি দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। পরে ভারতীয় বিএসএফ তাকে আটক করে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দেয়। নিহত বশিরের পরিবার জানায়, গত দুবছর ধরে তিনি প্যারালাইসিসে ভুগছিলেন।
বিজিবি জানায়, সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় বিএসফের হাতে আটক হয় নুর আলম। পরে মঙ্গলবার সকালে সীমান্ত পিলারের ১০৫৪ (২-এস) কাছে আসামের দ্বীপচর বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডারের সঙ্গে বিজিবি দাঁতভাঙা কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আটক নুর আলমকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। একই সঙ্গে আটক নুর আলমকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।
রৌমারী থানার ওসি গোলাম মর্তুজা জানান, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও রক্তাক্ত জখম রয়েছে। বিজিবি আটক যুবককে পুলিশে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।