‘আমরা কোনো দল না করেও নৈরাজ্যের শিকার হব কেন’
পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ পিএম
ভাংচুর
‘ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করে সব মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। পরিবারের ওপর হামলা করেছে। মামলা করায় জীবন নিয়ে হুমকির মুখে পড়েছি। লুটপাটের ঘটনায় জড়িতরা ক্ষতি করার জন্য ওতপেতে থাকে। বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যেতে ভয় হয়। আমরা কোনো রাজনীতি করিনি, তাহলে নৈরাজ্যের শিকার কেন হব?’
এক বছরের সেহজা আশরাফ রোজাকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে এভাবেই বলছিলেন সাহিদা আক্তার সুরমা (২৭)। সাহিদা আক্তার ভুক্তভোগী ফিরোজ আলমের স্ত্রী। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের তাণ্ডবের শিকার হয় পরিবারটি। সবদিকে থেকে নিরাশ হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবে সংবাদ করে।
সংবাদ সম্মেলনে কোম্পানির ডিলারশিপ (ব্যবসায়ী) ফিরোজ আলম লিখিত অভিযোগ ও মামলার বরাতে বলেন- গত ৫ আগস্ট ব্যক্তিগত আক্রসে জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল মৃধার নেতৃত্বে তার বাসায় হামলা চালানো হয়। এতে অংশ নেয় জেলা যুবদলের একাধিক নেতাকর্মী ও তার লোকজন।
এ সময় প্রতিষ্ঠান লাগোয়া বাসায় ভাঙচুর করে তার বৃদ্ধা মা সেফালী বেগমকে পিটিয়ে বাম হাত ভেঙে দেয় সন্ত্রাসীরা। একপর্যায় অভিযুক্তরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ক্যাশ ভেঙে নগদ টাকা এবং প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। অভিযোগ সংক্রান্ত ভিডিও সামজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে ৯ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং দ্রুতবিচারে আইনে পৃথক দুটি মামলা করে ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম। যে মামলায় আসামি করা হয় যুবদল নেতা সাইফুল মৃধাসহ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত অন্তত ১ ডজন ব্যক্তিদের। এছাড়াও অজ্ঞাতনামাও আসামি রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ জন।
বাদীর দুটি অভিযোগ আমলে নিয়ে পটুয়াখালী সদর থানাকে এজাহার নিতে নির্দেশ দেন। অথচ মামলা রেকর্ড নিয়ে গড়িমসি করছে পুলিশ এমন অভিযোগ করে পরিবারটি। মামলা প্রসঙ্গে পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের ওসি মো. জসীম বলেন, মামলা দুটি রেকর্ড হয়েছে কিন্তু পরবর্তীতে এ নিয়ে বাদী সঙ্গে কথা হয়নি।
ফিরোজ আলম সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, জমিসংক্রান্ত ঘটনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল মৃধা। এ ঘটনায় মামলা হলে আদালতে সাইফুল মৃধাকে কারাগারে পাঠান। এরপর থেকে ফিরোজ আলমের প্রতি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে যুবদল নেতা সাইফুল মৃধা। যে কারণে সরকার পতনের পর দলীয় সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে তাণ্ডব চালানো হয়।
মঙ্গলবার পটুয়াখালী প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন বাদী ফিরোজ আলমের বৃদ্ধ বাবা খালেক মৃধা, মাতা সেফালী বেগম, স্ত্রী শাহিদা আক্তার, বোন সালমা ও দুই শিশু সন্তান।