জামায়াত নেতা হত্যার ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী-এসপিসহ আসামি ১৯
মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৫৭ এএম
বন্ধুকযুদ্ধের নামে মেহেরপুর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও সাবেক পুলিশ সুপার একেএম নাহিদুল ইসলামসহ ১৯ জনের নামে হত্যা মামলা হয়েছে।
সোমবার মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন নাহারের আদালতে নিহত তারিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের ছোট ভাই তাওফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে মেহেরপুর সদর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দেন। এ মামলায় ১৯ জনের মধ্যে চারজন রাজনৈতিক নেতা ও বাকি ১৫ জন পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন এএসপি মোস্তাাফিজুর রহমান, এএসপি আব্দুল জলিল, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাঈদ মোমিন মজুমদার, সদর এসিল্যান্ড ফরিদ হোসেন, গাংনী র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন আশরাফ হোসেন, ডিএডি জাহাঙ্গীর আলম, মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার আসাদ মিয়া, ওসি ডিবি বাবুল আক্তার, সদর থানার ওসি রিয়াজুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম, এএসআই আব্দুল হান্নান, কনস্টেবল সাধন কুমার, নারদ কুমার, ডিবির কনস্টেবল জিল্লুর রহমান, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রসুল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক বারিকুল ইসলাম লিজন ও সাবেক ইউপি সদস্য দরুদ আলী।
মামলার এজাহারসূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে তারিক মো. সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলার সহকারী সেক্রেটারি ছিলেন। পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা থাকায় ভিন্নমতের নেতৃত্বকে সমূলে বিনাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করে।
২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ব্যক্তিগত কাজে তারিক মো. সাইফুল ইসলাম মেহেরপুর শহরের হোটেল বাজারে ইসলামী ব্যাংকের শাখার কাছে গেলে আসামি বারিকুল ইসলাম লিজন ও দরুদ আলী সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রসুলকে জানায়।
সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সুপারিশে তৎকালীন পুলিশ সুপার একেএম নাহিদুল ইসলামের নির্দেশে মামলার অন্য আসামিরা তারিককে আটক করে।
তাৎক্ষণিক সাংবাদিকরা জানতে পেরে পুলিশ সুপারের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত হলেও তারিকের স্ত্রী স্বামীর সন্ধানে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গেলে পুলিশ সুপার আটকের বিষয়ে অস্বীকার করেন। আটকের পর গোপনস্থানে রেখে তারিককে শারীরিক ও মানসিক নিযার্তন করে আসামিরা।
পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরতলী বামনপাড়া শ্মশানঘাট এলাকায় কথিত বন্ধুকযুদ্ধের নামে একাধিক গুলি করে তাকে হত্যা করে। পরদিন সকালে মেহেরপুর মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে অতিদ্রুত দাফনের নির্দেশ দেয় পুলিশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মারুফ আহমেদ বিজন জানান, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে মেহেরপুর সদর থানাকে এফআইআরের নির্দেশ দিয়েছেন।