চিকিৎসার অভাবে পঙ্গুত্বের পথে পুলিশের গুলিতে আহত চা দোকানি
রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ পিএম
চা দোকানি মনির, আগের ছবি
ঝালকাঠির রাজাপুরে এক চা দোকানি পায়ে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসা করাতে না পেরে পঙ্গু হতে বসেছে। উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের লেবুবুনিয়া বাজারে গুলির ঘটনা ঘটে। দোকানির নাম মো. মনির হোসেন। তিনি উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
মো. মনির হোসেন জানান, লেবুবুনিয়া বাজারে তার একটি ছোট চায়ের দোকান ছিল। এর আয় দিয়ে দুই ছেলের লেখাপড়াসহ তার চার সদস্যের পরিবার চালাতেন। তবে এখন পথে বসার মতো অবস্থা মনিরের। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজাপুর থানায় কর্মরত টহল পুলিশের তৎকালীন এসআই আজাদসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য মনিরের দোকানে চা খেতে আসেন। এ সময় এসআই আজাদের মোবাইল ফোনে একটা কল আসে। কল শেষ করেই আজাদ তার সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্য নুর ইসলামকে নিজের বন্দুকে গুলি লোড করতে বলে। নুর ইসলাম তার বন্দুকে গুলি লোড করে। হঠাৎ লোড করা বন্দুকে নুর ইসলামের আঙুলের চাপ লেগে গুলি বের হয়ে চা দোকানি মনিরের পায়ে লাগে। রাতেই পুলিশসহ স্থানীয়রা আহত মনির হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরের দিন সকালে মনিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১৫ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আসেন মনির। তার পায়ের মধ্যে স্পিন্টার থাকার কারণে বর্তমানে তার পা ফুল ওঠায় ব্যথায় কাতরাতে হয় মনিরকে। এখন তার পায়ের মধ্যে থাকা স্পিন্টার অপারেশনের মাধ্যমে বের করতে অনেক ব্যয়বহুল। এই খরচ জোগানো তার পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া চিকিৎসা করাতে গেলেও পুলিশের গুলির বিষয়টি জানতে পেরে চিকিৎসকরা তার কাছে পুলিশের ক্লিয়ারেন্স দাবি করেন। কিন্তু স্থানীয় থানা পুলিশ আজ কাল করে ক্লিয়ারেন্স না দিয়ে জোর করে মনিরের কাছ থেকে কাগজে স্বাক্ষর রেখে দেয়। বুধবার রাজাপুর প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মনির হোসেন এসব অভিযোগ জানান। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য নুর ইসলাম তার কর্মস্থলে না থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওসি মুহাম্মদ আতাউর রহমান বলেন, যে পুলিশের গুলিতে মনির হোসেন আহত হয়েছেন, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং মনিরকে চিকিৎসা সহায়তা করা হয়েছে। এখন যদি তার চিকিৎসা করাতে কোথাও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হয়, সেটা কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছে চাইলে আমরা দিব।