পৌরসভার জায়গার ভাড়ার টাকা কাউন্সিলরের পকেটে
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৫ পিএম
মানিকগঞ্জ পৌরসভার জায়গায় বসছে অস্থায়ী বাজার। মাসে ভাড়া ৫০ হাজার টাকা। ভাড়ার টাকা পৌরসভার তহবিলে জমা না দিয়ে কাউন্সিলর নিজের পকেট ভারি করছেন।
পৌরসভা সূত্র জানায়, পৌরসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২৩ সালের ১১ জুন পৌরসভার পুরাতন ভবনের জায়গা অস্থায়ী ভাড়া দেওয়া হয়। পৌরসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জায়গার ভাড়া ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে স্থানীয় কাউন্সিল শায়েখ শিবলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কাউন্সিল শায়েখ শিবলী শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেন। শফিকুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি ১০ মাস ভাড়া চালিয়ে জায়গা ছেড়ে দেন।
এরপর ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল রোকসানা ভান্ডারি নামের এক মহিলার কাছে জায়গা ভাড়া দেন কাউন্সিলর শিবলী। এ পর্যন্ত পৌরসভার তহবিলে মাত্র ৫ মাসের আড়াই লাখ টাকা জমা হয়েছে। আর বাকি ভাড়ার টাকা কাউন্সিলর শিবলী জমা না দিয়ে নিজের পকেট ভারি করেছেন।
পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, ১৫ মাস ধরে পৌরসভার জায়গায় অস্থায়ী বাজার বসানো হয়েছে। পৌরসভার নির্ধারিণ করা ৫০ হাজার টাকা ভাড়া হিসেবে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ভাড়া নিয়েছেন কাউন্সিল শিবলী। এর মধ্যে তিনি পৌরসভার তহবিলে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এছাড়া পৌরসভার শর্ত ভেঙে বর্তমান ভাড়াটিয়া রোকসানা বেগমের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা জামানত নিয়েছেন কাউন্সিলর শিবলী।
সরেজমিন দেখা যায়, মানিকগঞ্জ শহরের শহিদ রফিক সড়কের পাশেই পুরাতন পৌরসভার জায়গায় অস্থায়ী বাজার বসানো হয়েছে। ওই জায়গায় অস্থায়ী বাজার হিসেবে বিভিন্ন কসমেটিকসের দোকান বসেছে।
বর্তমান ভাড়াটিয়া রোকসানা বেগম বলেন, আমার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা জামানত নিয়েছেন কাউন্সিলর শিবলী। আমি প্রতি মাসের ভাড়া ক্লিয়ার করে দিয়েছি। আমার জামানতের ৪ লাখ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা উধাও হয়ে গেছে। এখন শিবলী বলছেন, ৩০ হাজার টাকা বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করতে লাগছে।
রোকসানা আরও বলেন, আমি টাকা জমা দেওয়ার রশিদ চাইলে কাউন্সিলর শিবলী বলেন- জায়গা আমার তোর সমস্যা কী? ভাড়া তো আমিই নিব। এছাড়া আগে যিনি ভাড়া নিয়েছিলেন তিনি ৬৮ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখে গিয়েছেন। সেই টাকা আমি পরিশোধ করে বিদ্যুৎতের লাইন এনেছি।
পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শায়েখ শিবলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি রোকসানার কাছ থেকে জামানত বাবদ কোনো টাকা নেই নাই। তিনি শুধু ৫০ টাকা করে আমাদের পৌরসভায় ভাড়া দেন।
রোকসানার কাছে ভাড়ার কোনো রশিদ নাই কেন? জানতে চাইলে কাউন্সিলর শিবলী বলেন, আমার কাছে রশিদ আছে। আমি অসুস্থ ঢাকায় আছি।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা বজলুর রহমানের কাছে ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ওই পুরাতন ভবনের ফাইল দেখে জানান, পৌরসভার তহবিলে মাত্র ৫ মাসের ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছে।