Logo
Logo
×

সারাদেশ

২৭ দিন ভুগে মারা গেল আমতলীতে দগ্ধ স্কুলছাত্র তেশাম

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী (বরগুনা)

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ পিএম

২৭ দিন ভুগে মারা গেল আমতলীতে দগ্ধ স্কুলছাত্র তেশাম

ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে ২৭ দিন পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল ৫ আগস্ট আগুনে দ্বগ্ধ স্কুলছাত্র ইহতাশিমুল হক তেশাম (১৭)। রোববার ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

সোমবার সকালে ওই ছাত্রের লাশ তার গ্রামের বাড়ি আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সিকদার সড়কের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ প্রতিবন্ধী মা ইল্লিন বেগম ও বাবা রবিউল ইসলাম।  

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমানের বাসায় আগুন দেয় একদল দুর্বৃত্ত। এতে ওই বাসার দোতলায় ইহতাশিমুল হক তেশাম আটকা পড়ে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ওই ছাত্র মেয়রের বাসায় আটকে ছিল। এতে সে আগুনে দ্বগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়। 

আমতলী পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ডের সিকদার বাড়ি সড়কের বাসিন্দা আমতলী টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র রবিউল ইসলামের ছেলে ইহতাশিমুল হক তেশাম।  

পরে স্থানীয় ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় তাকে। চার ঘণ্টা সেখানে চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢামেকে হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে তিনি চিকিৎসারত ছিল। ২৭ দিন পর রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। 

তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ছেলেকে হারিয়ে মা ইল্লিন বেগম ও ছোট দুই ভাই শেখ মো. আসাদুল্লাহ রায়হান ও শেখ হোসাইন আহম্মেদ ত্বোহা বাকরুদ্ধ হয়ে পরেছেন। তার মেজো ভাই রায়হান আমতলী টেকনিক্যাল স্কুলে নবম শ্রেণীর ছাত্র ও ছোট ভাই ওয়াবদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে পড়ে। 

রোববার বিকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে ইহতাশিমুল তেশামের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রাতে তেশামের লাশ গ্রামের বাড়ি আমতলী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সিকদার সড়কের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। 

সোমবার সকালে তার দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। 

প্রতিবেশী এ্যানি আক্তার বলেন, ইহতাশিমুল হক তেশাম খুল ভালো ছেলে ছিল। তার এমন মৃত্যু কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। তেশাম লেখাপড়ার পাশাপাশি বিদ্যুতের কাজ করত। ওই আয় দিয়েই চলত পরিবারের ভরণপোষণ। 

নিহতের ভাই শেখ মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ রায়হান বলেন, আমার ভাইকে দুর্বৃত্তরা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এ হত্যার বিচার আল্লাহ করবেন।

প্রতিবন্ধী মা ইল্লিন বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, মোর আর কিছুই রইল না। ক্যারে লইয়্যা মুই বাঁচমু। মোর পোলায় ল্যাহাপড়ার পর বিদ্যুতের কাম হরতো। তার আয় দিয়েই মোর সংসার চলত। এ্যাহন কি অইবে মুই কইতে পারি না। 

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ওই স্কুলছাত্রের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম