Logo
Logo
×

সারাদেশ

এস আলমের বিলাসবহুল গাড়ি সরানোর সময় যেসব বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০৯:২৩ এএম

এস আলমের বিলাসবহুল গাড়ি সরানোর সময় যেসব বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন

চট্টগ্রামে এস আলমের একটি কারখানা থেকে বিলাসবহুল অন্তত ১৪টি গাড়ি বিএনপি নেতাদের তত্ত্বাবধানে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নগরীর কর্ণফুলী থানাধীন মইজ্জারটেক এলাকার ওই কারখানা থেকে এই গাড়িগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়। এস আলমের সম্পদ কাউকে না কেনার এবং তাতে হাত না দেওয়ার ঘোষণা সরকারের তরফ থেকে আসার পর অস্থাবর সম্পদ এভাবে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। গাড়ি সরানোর সময় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্মসম্পাদক এনামুল হক এনাম, কর্ণফুলী থানা বিএনপির আহ্বায়ক এসএম মামুন মিয়া ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের গাড়িচালকসহ বিএনপির বেশকিছু নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে রাতের আঁধারে কারখানা থেকে একের পর এক বেশ কয়েকটি গাড়ি বের হতে দেখা যায় এবং এনাম ও মামুনের উপস্থিতিও দেখা গেছে।

কর্ণফুলী থানা এলাকার বাসিন্দা এক প্রত্যক্ষদর্শী যুগান্তরকে বলেন, রাত ১টার পর মইজ্জারটেক এলাকায় অবস্থিত এস আলম কোল্ড রোল স্টিল কারখানার ভেতর থেকে গাড়িগুলো বের করা হয়। এর মধ্যে মার্সিডিজ, বিএম ডব্লিউ গাড়িও রয়েছে। গাড়িগুলো বের হওয়ার পর দ্রুত নতুন ব্রিজ পার হয়ে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার হয়ে চলে যায়। কয়েকজন এসব গাড়ির পিছু নিলেও দ্রুত চালানোর কারণে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। গাড়ি বের হওয়ার সময় তারা কারখানার সামনে এনাম, মামুন মিয়া এবং আবু সুফিয়ানের গাড়িচালক পিপলুকে দেখতে পান। ভিডিও ফুটেজে তাদের ছবি দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায় মীর গ্রুপের একটি কারখানায় প্রথমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী পরিচয়ে এবং পরে ছাত্রদলের পরিচয়ে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবির একটি অভিযোগ পান। মীর গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুস সালামের কাছে এমন অভিযোগ পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। আবদুস সালাম এস আলমের বেয়াই। সালামের মেয়ে বিয়ে করেছেন এস আলমের (সাইফুল আলম) ছেলে। আবার এনামুল হক এনাম ও আবদুস সালাম মামাতো-ফুপাতো ভাই। এনাম বলেন, দলীয় লোকজন চাঁদা দাবি করছে-এমন অভিযোগ পেয়ে তিনি সরাসরি ঘটনাস্থলে যান। যেহেতু কালুরঘাট শিল্প এলাকাটি আবু সুফিয়ানের নির্বাচনি এলাকায় পড়েছে, তাই সুফিয়ানকেও তিনি খবর দেন। এস আলমের সম্পদ এখন সবার জন্য বিষ। তাই তাদের গাড়ি সরিয়ে নেওয়া বা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না। ভিডিও ফুটেজটি কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার। মইজ্জারটেকের এস আলম কারখানার নয় বলেও দাবি করেন তিনি। মীর গ্রুপের এমডির কাছে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবির বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

পটিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরিচ্ছন্ন বিএনপি নেতা এনামুল হক এনামকে বিপদে ফেলানোর জন্য মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। চাঁদাবাজির খবর পেয়ে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তা ঠেকাতে গিয়েছিলেন কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায়, মইজ্জারটেকে নয়। এ বিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, তিনদিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘এস আলমের সম্পদ যাতে কেউ না কেনেন, দেশের স্বার্থে অন্য কেউ যাতে এই সম্পদে হাত না দেয়।’

মূলত এরপরই এস আলম গ্রুপ বিএনপি নেতাদের সহায়তায় তাদের সম্পদ অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম