শাহরাস্তিতে বন্যায় সাড়ে ৬ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি
চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় গত ১০ দিনের বন্যার পানিতে সাড়ে ৪ হাজার কৃষকের ৩৪১ হেক্টর জমির রোপা আউশসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোপা আমনের বীজতলা। এতে কৃষকদের ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতির আশঙ্কা জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
গত কয়েক দিন শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপাড়া উত্তর, সূচিপাড়া দক্ষিণ, রায়শ্রী উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং আশপাশের এলাকা ঘুরে ক্ষতির সম্মুখীন ফসলের জমিগুলো চোখে পড়ে। এসব এলাকায় বড় বড় মাঠজুড়ে রয়েছে রোপা আউশ। তবে অধিকাংশই পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, বন্যায় উপজেলার ১২৯ হেক্টর জমির রোপা আউশ, বীজতলা ২০ হেক্টর, আবাদকৃত আমন ১৩৩ হেক্টর ও শাকসবজি ৫৯ হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৪১ জন।
শাহরাস্তি রায়শ্রী উত্তর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা উনকিলা গ্রামের কৃষক দুলাল জানান, এ বছর তিনিও ১ একরের অধিক জমিতে রোপা আউশ আবাদ করেছেন। তার জমিগুলোও এখন পানিতে তলিয়ে আছে। গাছের চিহ্নও দেখা যায় না। ঋণ করে টাকা নিয়ে জমিতে বিনিয়োগ করেছেন। এখন তিনি অনেকটা দিশেহারা।
শহীদ উল্লাহ নামে আরেক কৃষক বলেন, ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালে বন্যা হয়েছে কিন্তু এ ধরনের হয়নি। এবারের বন্যায় আমাদের ফসলসহ সব ধরণের ক্ষতি হয়েছে। বসতঘর, রাস্তা ও ফসল সবকিছু শেষ। বহু কৃষকের ধান পচে গেছে। অনেকেই পানির নিচ থেকে ধান কেটেছেন কিন্তু ধান খুবই কম। সব মাটিতে পড়ে গেছে।
সূচিপাড়া উত্তর ইউনিয়নের দইকামতা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তাদের এলাকার সব ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে আছে গত ১০ দিন। পানির উচ্চতা প্রায় ৫ ফুট। ফসলের এ ধরনের ক্ষতি গত এক দশকেও হয়নি। আউশ কেউ কাটতে পারেনি। আমনের বীজতলা পানির নিচে। শাকসবজি কিছু অবশিষ্ট নেই।
শাহরাস্তি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়শা আক্তার বলেন, গত প্রায় ১০ দিনে উপজেলার বন্যাকবলিত ইউনিয়নের মাঠ জরিপে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ৪ হাজার কৃষকের তথ্য পেয়েছি। রোপা আউশসহ বিভিন্ন ফসলে ৬ কোটি ৪০ লাখ ৫০ হাজার টাকার প্রাথমিক ক্ষতির আশঙ্কা করছি।