ধীরে নামছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১২:১২ পিএম
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ডাকাতিয়া, মেঘনার তীরবর্তী ও বেড়িবাঁধ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। মেঘনার জোয়ার ও টানা ১৫ দিনের ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যার পানি যত কমছে, ততই স্পষ্ট হয়ে উঠছে ক্ষতির চিত্র। স্রোতে ভেঙে গেছে বিভিন্ন গ্রামের সড়ক।
শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মেঘনা নদীর জোয়ার ও ১৫ দিনের টানা বৃষ্টিপাতের ফলে রায়পুর উপজেলায় বন্যা শুরু হয়েছে। মেঘনা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে বর্তমানে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বুধবার থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তলিয়ে যাওয়া বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি সরে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষতের চিহ্ন। বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫ দিন আগ থেকে টানা ভারি বর্ষণে বন্যা দেখা দেওয়ায় রায়পুর পৌরসভার পশ্চিম কাঞ্চনপুর, দেনায়েতপুর, মধুপুর ও দেবিপুরসহ ৯টি ওয়ার্ডে। কেরোয়া, বামনী, সোনাপুর, চরপাতা চরমোহনা এবং মেঘনা উপকূলীয় ৪টি ইউনিয়নসহ ১০০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
সম্প্রতি রায়পুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহেদ আরমানের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, সচেতন নাগরিক, পুলিশ, রেড ক্রিসেন্ট, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যক্তিরা ডাকাতিয়া নদী সংযোগ খালে অবৈধ বাঁধগুলো কেটে দিয়েছে।
কেরোয়া ইউনিয়নের মো. ইউনুস ও হায়দারগঞ্জে ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ বলেন, বুধবার সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সূর্যের আলোয় আলোকিত হয়েছে পুরো উপজেলা। ফলে বেশিরভাগ বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যায়। তবে মেঘনা নদীর সংলগ্ন বেরিবাঁধ সড়কসহ পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডসহ উপজেলার ১০টি ইউপির কেরোয়া পানপাড়া, হায়দারগঞ্জ, খাসেরহাট, টি অ্যান্ডটি, রুস্তম আলী কলেজ, চরপাতা, মহিলা কলেজ, বামনীসহ বেশির ভাগ সড়ক ধসে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মেঘনা নদীর পানির কমছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল ১১টা পর্যন্ত ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। বর্তমানে নদীর রায়পুরে পয়েন্টে পানির সমতল রয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ মিটার। ফলে বন্যা পরিস্থিতি দ্রুত উন্নতি হচ্ছে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান ও এলজিইডির প্রকৌশলী সুমন মুন্সি বলেন, উপজেলায় পানি কমতে শুরু করেছে। অধিকাংশ সড়ক, রাস্তা, কালাভাট ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে দ্রুত। বাসাবাড়ি থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। ভেঙে যাওয়া সড়ক দ্রুত মেরামতের চেষ্টার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।