Logo
Logo
×

সারাদেশ

নোয়াখালীতে খালের বাঁধ রক্ষায় হাজার হাজার নারী পুরুষ

Icon

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৫ এএম

নোয়াখালীতে খালের বাঁধ রক্ষায় হাজার হাজার নারী পুরুষ

নোয়াখালীর কবিরহাটের চরআলগী খালে আড়াআড়ি দেওয়া বাঁধ রক্ষায় লাঠি হাতে হাজারো নারী পুরুষ পাহারা বসিয়েছে। অন্যদিকে ওই বাঁধ কেটে কবির হাট ও সদর পূর্বাঞ্চলের পানিবন্দিদের রক্ষার জন্য মানববন্ধন করেছে ছাত্র-জনতা। এ নিয়ে যেকোনো মূহুর্তে রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে কবিরহাটের ধানশালিক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রিকশাওয়ালার দোকান এলাকায় এবং সদরের সোনাপুর জিরোপয়েন্টে গিয়ে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের নভেম্বরে একনেকে জলাবদ্ধতা নিরসন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে নোয়াখালী খালসহ জেলার ২৩টি খালের পুনঃখননে ৩২৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন করে।

এতে ১৬০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নসহ এ প্রকল্পের আওতায় ১৮২ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, বামনি নদীতে ড্রেজিং, স্লুইস গেইট, ক্লোজার ও রেগুলেটর নির্মাণ এবং ১০ কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণ করার কথা ছিল।

তবে স্থানীয়দের দাবি, সাবেক সরকারের আমলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল কোম্পানী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই কাদের মির্জা, শাহাদাত হোসেন, ভাগিনা ফখরুল ইসলাম রাহাত নোয়াখালী খালের মুখে নিজেদের অবৈধ প্রজেক্ট বাঁচাতে অপরিকল্পিতভাবে চরআলগী খাল খনন করে। এতে অনেকগুলো সেতু ধসে এলাকার মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া এলাকায় ব্যাপক নদীভাঙনের শিকার হয় স্থানীয় অধিবাসীরা।

ধানশালিক ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ইয়াছিন আরাফাত বলেন, চরআলগী খাল খননের পর ব্যাপক ভাঙন তৈরি হলে প্রশাসন রিকশাওয়ালার দোকানে খালের মাঝে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে ভাঙন রক্ষা করে। এখন প্রভাবশালীরা বন্যার পানি নিষ্কাশনে সেই বাঁধ কাটতে চাইলে এলাকাবাসী বাধার সৃষ্টি করে। সবাই লাঠি হাতে দিনরাত বাঁধ পাহারা দিচ্ছে। তারা পানি নিষ্কাশনের জন্য নিজেদের চলাচলের রাস্তাও কয়েকস্থানে কেটে দিয়েছে।

স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক মো. আলমগীর খান বলেন, জীবন দেব, রক্ত দেব তবুও বাঁধ কাটতে দেব না। আমরা পানি নিষ্কাশনের জন্য চলাচলের পাকারাস্তা পাঁচ স্থানে কেটে দিয়েছি, প্রয়োজনের আরও কাটব। তবুও খালের বাঁধ কাটতে দেব না। 

এদিকে বুধবারের হামলার প্রতিবাদে ও চরআলগী খালে বাঁধ কেটে নোয়াখালীর পানিবন্দি মানুষকে রক্ষার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সদরের সোনাপুর জিরো পয়েন্টে মানববন্ধনের আয়োজন করে ছাত্র-জনতা। এতে শিক্ষার্থী মো. ইব্রাহীম, এইচ এম রাসেল, শামছুল হক সৌরভ, শিক্ষক হাবিবুর রহমানসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।

তাদের দাবি, চরআলগী খালের বাঁধ না কাটলে নোয়াখালী জেলার পানিবন্দি মানুষের কষ্ট লাগব হবে না। এছাড়া বুধবার ধানশালিক বাজারের ছাত্র-জনতার উপর যারা অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

এদিকে নোয়াখালী খালের অভিযুক্ত দখলদারদের অনেকে এখন পলাতক। তাদের মোবাইলে ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেননি। তবে কবিরহাটের ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল কোম্পানী বলেন, নোয়াখালী খালে আমার এক ফুট জায়গাও নেই। এসব আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, বুধবার চরআলগী খালে বাঁধ কাটার জন্য কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন গেলেও গ্রামবাসীরা তাদের সেখানে ঢুকতে দেয়নি। বিষয়টি আলাপ আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম