ধামরাইয়ের কুশুরা ইউনিয়ন
২৫ প্রকল্পের টাকা নিয়ে লাপাত্তা চেয়ারম্যান
ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩৫ এএম
সরকারি ২৫টি প্রকল্পে বরাদ্দ ৬০ লাখের বেশি টাকা নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন কুশুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকেই তিনি লাপাত্তা। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ।
নুরুজ্জামান ঢাকা-২০ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ-সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজির আহমেদের ভগ্নিপতি। স্থানীয়রা বলছেন, এমপি ও সরকারদলীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে ব্যাপক দ–র্নীতি করেছেন নুরুজ্জামান। তার স্বেচ্ছাচারিতায় এলাকাবাসী উন্নয়নবঞ্চিত হয়েছেন। মানুষের সঙ্গে করেছেন দুর্ব্যবহার। ইউপি সদস্যদের রেখেছিলেন কোণঠাসা করে। তবে ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথার বলার সাহস পাননি কেউ।
সূত্র জানায়, কুশুরা ইউনিয়নের আয়তন ২৪.৬৯ বর্গকিলোমিটার। ছোট-বড় ৪৭টি গ্রাম রয়েছে। এগুলোতে রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই নাজুক। সেসবে নজর না দিয়ে তার নজর ছিল শুধু লুটপাটে। শেষ আড়াই বছরে পরিষদের ভেতরে ফুল গাছ কেনা ও বাগান পরিচর্যার পেছনেই ব্যয় করেছেন সাড়ে ৭ লাখ টাকা!
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার তথ্যমতে, ইউনিয়নের জন্য ২৫ প্রকল্পে ৫৮ লাখ টাকা, ৩ টন চাল ও ২ টন গম বরাদ্দ নিয়েছেন চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো-পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনার নির্মাণ বাবদ ৬ লাখ টাকা, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে শহিদ মিনারের অবশিষ্ট নির্মাণকাজ সমাপ্তকরণ প্রকল্পের বিপরীতে ৫ লাখ টাকা, পরিষদ ভবনের হলরুম ও বারান্দায় টাইলসকরণ প্রকল্পে ৪ লাখ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ‘পরিষদ ক্যাম্পাসের সামনের অংশে পার্কিং টাইলস ও বারান্দার সামনের অংশের ফ্লোর টাইলসকরণ’ প্রকল্পের ৫ লাখ টাকা, নির্মাণাধীন শহিদ মিনার হয়ে ভূমি অফিস পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা নির্মাণ ও কুশুরা মাছ বাজারের অস্থায়ী শেড নির্মাণ’ প্রকল্পের ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পরিষদ ক্যাম্পাস ও ভূমি অফিসের উত্তর ও দক্ষিণ পূর্ব পাশের গর্ত ভরাট (দ্বিতীয় পর্যায় এমপি কোটায়)’ প্রকল্পে ৩ লাখ টাকা, ভূমি অফিসের উত্তর পার্শ্বস্থ অবশিষ্ট ১৭ মিটার বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ’ বাবদ ২ লাখ টাকা ইত্যাদি। কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায়ও টাকা ও চাল বরাদ্দ নিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে নুরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোমিনুল হক বলেন, কুশুরা ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে পরিষদের অভ্যন্তরে বারবার প্রকল্প নিয়েছেন। প্রকল্প যাচাইয়ে গেলেও তেমন গুরুত্ব দিতেন না তিনি।