Logo
Logo
×

সারাদেশ

কোটা আন্দোলনে পুলিশের গুলি

পঙ্গু অটোরিকশা চালক শাহীনুরের খোঁজ রাখেনি কেউ

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৩২ এএম

পঙ্গু অটোরিকশা চালক শাহীনুরের খোঁজ রাখেনি কেউ

কোটা সংস্কার ইস্যুতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঢাকায় অটোরিকশা মিছিলে অংশ নেওয়া শাহীনুর হোসেন (৪০) পুলিশের গুলিতে পঙ্গুত্ব বরণ করলেও কেউ তার খোঁজ রাখেনি। সাত সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম অসহায় শাহীনুর এখন রংপুরের পীরগঞ্জের কুমেদপুর ইউনিয়নের রত্মেশ্বরপুর গ্রামের বাড়িতে চিকিৎসাহীন আছেন। চিকিৎসার অর্থ সংকটসহ পরিবার নিয়ে করছেন মানবেতর জীবনযাপন। তিনি ওই গ্রামের মৃত গোলজার হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে ২০ জুলাই শাহিনুর হোসেনসহ দেড় শতাধিক অটোরিকশা চালক মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। মিছিলটি ঢাকার শনির আখড়ায় পৌঁছলে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা অতিক্রম করে সামনে এগোতেই পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে আর কিছুই মনে নেই তার। 

অশ্রুসিক্ত চোখে শাহীনুর বলেন, আমাদের কয়েকজন ওইদিন ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। আমাকেও মরা ভেবে কেউ নিতে আসেনি। কিন্তু মসজিদ থেকে মাগরিবের নামাজ শেষে ফেরার পথে কয়েকজন মুসল্লি আমার নড়াচড়া দেখে স্থানীয় দুটি মেডিকেলে ভর্তি করাতে ব্যর্থ হয়। ওই সময় আমার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে ওই অজ্ঞাতনামা মুসল্লিরা আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করান। গুলিটা আমার বাম ঘাড়ের নিচে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়। সাত ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে আমাকে। আমি এখনও জোরে কথা বলতে কিংবা হাঁটাচলাও করতে পারি না। আমার চিকিৎসার জন্য পরিবারের লোকজন অনেক টাকা ধার-কর্জ করেছে। এ টাকা কীভাবে পরিশোধ করব-বলতে বলতে আবারও কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহীনুর। 

আপনারা অটোরিকশা চালক হয়ে আন্দোলনে যোগ দিলেন কেন-এমন প্রশ্নের জবাবে অনেকটা ক্ষিপ্ত হয়ে আক্ষেপ করে শাহীনুর হোসেন বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা (ছাত্র-ছাত্রী) অধিকার আদায়ে রাস্তায় গুলি খেয়ে মরছে, আমরা তা মানতে পারি? ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সহমত জানিয়ে রাস্তায় নেমেছিলাম। 

শাহীনুরের মা রাজেকা খাতুন বলেন, ‘হামার একনা নাতি পাভেল হোসেন ওটাও মানুষিক ভারসাম্যহীন। কখন কী করে ওকে সামলানো দায়। জায়গা-জমিও নেই। নাতনি দুটি জীবিকার সন্ধানে অল্প বয়সে গার্মেন্টে চাকরি করে। নাতি, নাতনি, বৌ, বেটা মিলে ৭ সদস্যের সংসার কিভাবে চলবে? পঙ্গু হয়া এলা নিজে বাঁচবে নাকি সংসার বাঁচাবে!’ 
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম