মহেশখালীতে আ. লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান বাচ্চু গ্রেফতার, অস্ত্র উদ্ধার
মহেশখালী (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩০ এএম
ছবি: বাচ্চু
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি একটি সাইক্লোন শেল্টার দখল করে বসবাস করার অভিযোগ ছিল আওয়ামী লীগ নেতা ও ধলঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চুর বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ভোরে ধলঘাটায় অভিযান চালিয়ে সাইক্লোন শেল্টারটি উদ্ধার করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চুকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার জিম্মা থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় বাচ্চুর লোকজন নৌবাহিনীর সাথে আক্রমণাত্মক আচরণ করে। এ ঘটনায় রাতেই মহেশখালী থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে।
জানা গেছে- দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নের মহুরিঘোনা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র দখল করে বসবাস করে আসছিলেন স্থানীয় আওয়ামী নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতেন তার নানান কর্মকাণ্ড। আশ্রয় কেন্দ্রের ভেতরে দেখা যায়- যেখানে ব্যক্তিগত বাড়ির আদলে প্রত্যেকটা রুমে খাট, আলমারি ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রে সজ্জিত। দেয়ালে লাগানো আছে তার দলীয় পোস্টার।
মঙ্গলবার ভোরে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আশ্রয় কেন্দ্রে অভিযান চালায় নৌবাহিনী। এ সময় তাকে হাতেনাতে আটক করে তারা। পরে বিভিন্ন রুমে অভিযান চালিয়ে বন্দুক ও বন্দুকের গুলিসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাকে আটক করে নিয়ে আসার সময় তার সমর্থকরা নৌবাহিনীর কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে নৌবাহিনীর ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে নৌবাহিনীও আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। হামলায় যমুনা টেলিভিশনের কক্সবাজার প্রতিনিধি, ক্যামেরা সহকারী ও নৌ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য আহত হয় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ভুক্তভোগীদের দাবি- চেয়ারম্যান তার বাহিনী দিয়ে এ পর্যন্ত চার জনকে খুন করিয়েছেন। হত্যার পর মামলা করারও সাহস পায়নি। ভয়ে চেয়ারম্যানের এলাকা দিয়ে চলাচলও করতে পারেনি। আশ্রয় কেন্দ্র দখলের পর এখান থেকেই পরিচালিত হতো চেয়ারম্যানের সব অপরাধ কর্মকাণ্ড।
মহেশখালীতে নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আলী হায়দার চৌধুরী জানান- তার বিরুদ্ধে এ আশ্রয় কেন্দ্র দখল করে অবৈধ অস্ত্রের মজুদ, অন্যায় কার্যক্রম ও আশ্রয় কেন্দ্রকে টর্চারসেলে পরিণত করার অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর ভোর ৫টার দিকে ওই আস্তানা থেকে তাকে গ্রেফতার ও ১টি দেশীয় তৈরি বন্দুক, ২ রাউন্ড গুলিসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। তাকে আটক করতে গেলে তার সুবিধাভোগী লোকজন নৌবাহিনীর সাথে আক্রমণাত্মক আচরণ করে এতে কিছু নৌবাহিনী সদস্য হালকা আহত হয়। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাকিব ও লেফটেন্যান্ট মিনহাজ।
মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানিয়েছেন- নৌবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে মহেশখালী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চুর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন নৌবাহিনীর এক সদস্য। মামলাটি তদন্ত করছেন মহেশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজিব চৌধুরী।