স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন, প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
বগুড়া ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ১০:০০ পিএম
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোজাফফর হোসেন এবং জেসমিন আকতার। ছবি: যুগান্তর
বগুড়ায় পরকীয়ার জেরে জামাল উদ্দিন খাজা হত্যা মামলায় তার স্ত্রী জেসমিন আকতারকে (৫২) যাবজ্জীবন ও প্রেমিক মোজাফফর হোসেনকে (৬০) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ে স্ত্রী জেসমিন আকতারের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোজাফফর হোসেনের একই পরিমাণ জরিমানা করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ হাবিবা মণ্ডল এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নাসিমুল হক হলি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিহত জামাল উদ্দিন খাজা বগুড়া শহরের বৃন্দাবন পূর্বপাড়ার মৃত আমির আলী খলিফার ছেলে। তিনি ফুওয়াং ফুডসের পণ্য সরবরাহকারী ছিলেন। তার স্ত্রী জেসমিন আকতারের সঙ্গে ভগিনীপতি বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রানীরহাটের বয়ড়াদীঘি গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে মোজাফফর হোসেনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
জামাল উদ্দিন টের পেয়ে স্ত্রী জেসমিনকে শাসন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি পথের কাঁটা দূর করতে পরকীয়া প্রেমিকের যোগসাজশে স্বামী জামাল উদ্দিন খাজাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুসারে জেসমিন ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর রাতে ছেলে জেসম রিমনকে (২১) সঙ্গে নিয়ে বগুড়া সদরের চাঁদমুহা গ্রামে বাবার বাড়িতে ওয়াজ মাহফিলের দাওয়াতে যান। ওই রাতেই মোজাফফর হোসেন বাড়িতে ঢুকে শিলপাটা ও লোহার শাবল দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে জামাল উদ্দিন খাজাকে হত্যা করে। পরদিন পুলিশ মরদেহ উদ্ধার ও হত্যায় জড়িত সন্দেহে স্ত্রী জেসমিন আকতার এবং ভগিনীপতি মোজাফফর হোসেনকে গ্রেফতার করে।
এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে জেমস রিমন মা জেসমিন আকতার ও ফুফা মোজাফফর হোসেনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে মামলাটি ডিবি পুলিশে দেওয়া হয়। আসামি মোজাফফর হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মতিউর রহমান ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি নাছিমুল করিম হলি ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট রুবেল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মোজাফফর হোসেন মজনু মামলা পরিচালনা করেন।