Logo
Logo
×

সারাদেশ

রাঙামাটিতে পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে

Icon

সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম

রাঙামাটিতে পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে

ছবি: যুগান্তর

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে রাঙামাটির বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল। বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা। এছাড়া লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, সদর ও নানিয়ারচর উপজেলাতেও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়। 

এতে তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। প্রশাসন থেকে এখনো ক্ষতিগ্রস্তদের সঠিক তালিকা নিরুপণ করতে না পারলেও জেলায় প্লাবিত হয়ে অন্তত ২০-২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি। চরম দুর্ভোগে পানিবন্দি মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণ তৎপরতাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান।  

তিনি জানান, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা চলছে। নগদ টাকা ও খাদ্যশস্য বরাদ্দ দিয়ে সহায়তা বিতরণ করা হচ্ছে। জেলার বাঘাইছড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে। এতে আশঙ্কা দূর হয়েছে। লংগদু উপজেলায় কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা বাড়ায় শহরসহ সদর উপজেলার বেশ কিছুসংখ্যক হ্রদ তীরবর্তী এলাকায় ঘর-বাড়ি ডুবছে। 

এদিকে উজান থেকে নামছে বন্যার পানি। এতে পাহাড়ি ঢলে এখন বিপৎসীমায় রয়েছে কাপ্তাই হ্রদের পানি। ডুবছে হ্রদ তীরবর্তী মানুষের বাড়ি-ঘর ও স্থাপনা। শহরের রিজার্ভমুখ, পুরানবস্তি, জুলুক্যাপাহাড়, গর্জনতলী, তবলছড়ি, আসামবস্তি, শান্তিনগর, রাঙাপানিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়িঘর, স্থাপনা ও রাস্তা তলিয়েছে। ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। 

হ্রদের পানি উঠছে রাঙামাটি শহরের প্রধান সড়কে সংযুক্ত ফিশারি এলাকার বাঁধে। ভাঙছে বাঁধটির বিভিন্ন অংশে। এতে ঝুঁকির সম্মুখীন বাঁধটি। কাপ্তাই হ্রদের পানির চাপ কমাতে রোববার থেকে দফায় দফায় বাঁধের জলকপাট খুলে দিয়ে ছাড়া হচ্ছে পানি। এসব পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে। এতে চন্দ্রঘোনা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় রাঙামাটি-রাজস্থলী-বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সূত্র জানায়, কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮ ফুটের ওপর চলে যাওয়ায় রোববার সকালে কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট খুলে দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি ভাটি এলাকার কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন করা হয়। এতে হ্রদে পানির চাপ কমে আসায় ৬ ঘণ্টা পর দুপুর ২টায় বাঁধের স্প্রিলওয়ের জলকপাটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর রেকর্ড করা হয় ১০৮ দশমিক ৬০ ফুট বা এমএসএল (মীন সী লেভেল)। হ্রদের পানির ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। এর ১০৮ এমএসএল ক্রস করলে বিপৎসীমা ধরা হয়। ফলে রোববার সন্ধ্যায় আবারও কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট খুলে দিয়ে হ্রদের পানির চাপ কমাতে হয়েছে। রাতে আবার বন্ধ করে সোমবার সকাল ৭টায় জলকপাটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। 

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) এটিএম আবদুজ্জাহের বলেন, রোববার সকাল ৮টায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হলেও দুপুর ২টায় সব জলকপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়; কিন্তু বিকালে আবার কাপ্তাই হ্রদে পানির লেভেল বেড়ে যাওয়ায় সন্ধ্যায় আরেক দফায় জলকপাট খুলে দিয়ে পানি ছাড়তে হয়েছে। 

এরপর রাতে বন্ধ করে সোমবার সকাল ৭টায় আবার বাঁধের সব জলকপাট খুলে হ্রদ থেকে পানি ছাড়া হয়। এভাবে হ্রদে যতদিন পানি বাড়তে থাকে ততদিন রুলকার্ভ অনুসরণ করে বাঁধের জলকপাট খুলে পানি ছাড়া এবং বন্ধ করা অব্যাহত থাকবে। সোমবার বিকালে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ ছিল ১০৮ দশমিক ৮৭ ফুট।  

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম