শেখ হাসিনা-কাদের-রাঙ্গা-রাসেল-সাদ্দামসহ ৮৫ জনের নামে হত্যা মামলা
গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০১:৪৪ পিএম
গাজীপুর মহানগরীর বড়বাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া মো. মঞ্জু মিয়া (৪৩) নামের এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৮৫ জনের নামে মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৫০০–৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
রোববার নিহতের বাবা ইনছার আলী বাদী হয়ে গাজীপুর মহানগীরর গাছা থানায় মামলাটি করেন।
নিহত মঞ্জু মিয়া একজন রাজমিস্ত্রি ছিলেন। স্ত্রী ও বাবাকে নিয়ে তিনি নগরের বড়বাড়ী এলাকায় জয়বাংলা রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার জুয়ান এলাকায়।
মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, রংপুরের পীরগাছা-কাউনিয়া এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য টিপু মুনশি, সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান (রাঙ্গা), সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান (রাসেল), গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান (কিরন), ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাদ্দাম, সাধারণ সম্পাদক ইনান প্রমুখ। মামলায় শেখ হাসিনাসহ প্রথম ১৯ জনকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুলাই মঞ্জু মিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বড়বাড়ী বাজারের সামনের রাস্তায় আসেন। সেখানে আসামিরা বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, চাপাতি প্রভৃতি দেশি–বিদেশি অস্ত্র নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়কের পাশে কাঁচাবাজারের সামনের রাস্তায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেন। এতে মঞ্জু মিয়াসহ ২৫–৩০ জন আহত হন। পরে আসামিরা গুলি ছুঁড়তে শুরু করেন। বেলা সোয়া একটার দিকে মঞ্জু মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। খবর পেয়ে মঞ্জু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম ঘটনাস্থলে আসেন এবং উপস্থিত ছাত্র-জনতার সহায়তায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিকাল সাড়ে ৪টায় মঞ্জু মিয়ার মৃত্যু হয়।
বাদী ইনছার আলী জানান, মঞ্জুকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। দেশব্যাপী অস্থিরতা ও থানার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এজাহার দিতে দেরি হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর পুলিশের গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম। তিনি বলেন, মামলার এজাহারে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রসহ মারধর করে গুরুতর জখম করা ও গুলি করে খুন এবং এ কাজে হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।