কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে ঝুলন্ত সেতু
রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটির মনোরম ঝুলন্ত সেতু। বৃষ্টিপাত কমে আসায় রাঙামাটিতে বন্যার পরিস্থিতি এখন উন্নতির দিকে। ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি। জেলার বাঘাইছড়িতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা দিন সময় লাগবে।
উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ১০ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। এতে প্রায় দুই হাজার দুর্গত লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেন বলে জানিয়েছেন বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার।
এদিকে সম্প্রতি বৃষ্টিপাতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে অবস্থিত আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটির পাটাতন ইতোমধ্যে প্রায় এক ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা।
তিনি বলেন, পানি সরে না যাওয়া পর্যন্ত সেতু দিয়ে চলাচল সম্ভব হবে না। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সেতুটি বন্ধ থাকলে প্রতি মাসে লোকসান যাবে ১০-১৫ হাজার টাকা রাজস্ব আয়।
সম্প্রতি টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটি সদরসহ কাউখালী, নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলার বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে বহু পরিবারের বাড়িঘর, স্থাপনা, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি তলিয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা। বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে জেলায় বন্যার পরিস্থিতির উন্নতি হয়ে আসছে বলে জানায় প্রশাসন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরীন আক্তার বলেন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত বন্ধ হলে বাঘাইছড়ির বন্যা পরিস্থিতি পুরোদমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে কিছুটা দিন সময় লাগবে। এবার বাঘাইছড়ি উপজেলায় ১০ হাজারের অধিক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে প্রায় দুই হাজার দুর্গত মানুষ সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।
এদিকে সম্প্রতি বৃষ্টিপাতে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ বেড়ে গেছ। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হ্রদে পানি উচ্চতা ছিল ১০৫ দশমিক ৮৪ ফুট বা এমএসএল (মীনস সি লেভেল)।
কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট। আপাতত হ্রদ হতে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেই। হ্রদে পানির পরিমাণ ১০৮ ফুট অতিক্রম করলে হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ছাড়া হ্রদে পানি বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৫টি ইউনিট দিয়ে ২১৭-২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।