Logo
Logo
×

সারাদেশ

অস্বাভাবিক জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত রায়পুরের মেঘনা উপকূল

Icon

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম

অস্বাভাবিক জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত রায়পুরের মেঘনা উপকূল

চার দিনের টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উপকূলের চরাঞ্চলসহ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ১০ ফুটের বেশি জোয়ারে নদী এলাকা থেকে ৪ কিলোমিটার দূরের লোকালয় পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে।

মঙ্গলবার পর্যন্তও কমেনি জোয়ারের পানি। শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকাল ৩টা থেকে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। 

রায়পুর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশী এবং উত্তর চরআবাবিল ও দক্ষিণ চরআবাবিল ইউপির চরবংশী, চরকাছিয়া, চরজালিয়া, চরইন্দ্ররিয়া, আলতাফ মাস্টার মাছ ঘাট ও সাজু মোল্লার মাছ ঘাট এলাকাসহ ৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে জোয়ারের বিষয়টি জানা গেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীসংলগ্ন রায়পুর উপজেলার বিস্তির্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। লোকালয়ে জোয়ারের পানিতে দেখা যায়৷ এতে রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, ফসলি জমি, কাঁচা-পাকা নিচু ঘর ও পানের বরজগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে টানা চার দিন জোয়ারে উপকূল প্লাবিত হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ জোয়ারে ক্ষেতের বীজতলা নষ্টসহ ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। হাঁস-মুরগিসহ গবাদি পশু ও পানের বরজ নিয়ে বিপাকে পড়ছেন গৃহস্থ ও চাষিরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মেঘনা নদীর চরভৈরবি থেকে রায়পুরের প্রায় ২০ কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধের কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও গত ২০ বছরেও কোনো খোঁজখবর নেই। এতে প্রায় ২০ কিলোমিটার অরক্ষিত উপকূলীয় এলাকা প্রতিবছরই জোয়ারে ভেসে যায়। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমাল এ উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছে; যার ক্ষতচিহ্ন এখনো উপকূলে দৃশ্যমান। এরমধ্যে পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত হয়ে ক্ষেতের বীজতলা নষ্ট ও পুকুরে চাষের মাছ ভেসে গেছে। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ হলে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেত উপকূলের বাসিন্দারা।

চরকাছিয়া এলাকার বাসিন্দা আইয়ুব মাঝি, খুরশীদ ও  মাহমুদ আলী এবং চরইন্দ্রুরিয়া গ্রামের লিটন মাঝি ও আবেদ আলী জানান, জোয়ারের পানিতে তাদের পুরো বাড়ি ডুবে ছিল। নিচু ভিটির ঘরের ভেতরে পানি ঢুকেছে। সবাইকে চৌকি-খাটে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে ছিল। ক্ষেতে অনেকেই আমনের বীজতলা তৈরি করেছে। জোয়ারের পানিতে ডুবে সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। দিনে ও রাতে প্রতিদিন দুইবার জোয়ার ওঠে। রাতের জোয়ারে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। খাঁচার ভেতরে থাকা অনেকে মুরগি পানিতে ডুবে মারা গেছে।

রায়পুরের হায়দরগন্জ বেগম রোকেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন ও হায়দরগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট মাছ ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ বলেন, নদীর স্বাভাবিক জোয়ার উপকূলে প্রবেশ করে না; কিন্তু স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ১০ ফুট বেশি জোয়ার ছিল। এতে নদী থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পূর্বে লোকালয় পর্যন্ত তীব্র স্রোত নিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। প্রতি বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢোকে; কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ বছর অসময়ে জোয়ারের পানিতে উপকূল প্লাবিত হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম