ছবি সংগৃহীত
মুক্তিযুদ্ধের সময় বয়স মাত্র ৯ বছর ছিল মো. তোফাজ্জেল হোসেনের। তারপরও তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা। নিয়মিত তুলছেন ভাতা। অভিযোগ উঠেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা সেজে ১৫ বছর ধরে সরকারি কোষাগার থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তোফাজ্জেল বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ি গ্রামের আয়নুদ্দিন কাজীর ছেলে।
জানা গেছে, তোফাজ্জেল ১৯৭৮ সালে চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এই সনদ অনুসারে তার জš§ ১৯৬২ সালের ২ এপ্রিল। সে হিসাবে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল ৮ বছর ১১ মাস ২৫ দিন। তখন তিনি প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, তোফাজ্জেল তার শ্যালক সাবেক আমতলী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একেএম সামসুদ্দিন শানুর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় গেজেটভুক্ত হন। তার গেজেট নং-৪৭০। এক্ষেত্রে তিনি এসএসসি পাশের সনদ গোপন করে অষ্টম শ্রেণি পাশ দেখিয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তুলছেন।
এদিকে তোফাজ্জেল এসএসসির সনদ দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন। ওই চাকরি থেকে ২০০৫ সালে অবসরে যান। তিনি সেনাবাহিনীর অবসর ভাতাও তুলছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তোফাজ্জেল এসএসসি পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে কৃতকার্য হন। তার এসএসসি পরীক্ষার রোল নং-১১৩, নিবন্ধন নং-২৩৪৩৫, শিক্ষাবর্ষ ছিল ১৯৭৬-৭৭।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তোফাজ্জেল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমি এসএসসি পাশ করিনি এবং সেনাবাহিনীতেও চাকরি করিনি। আমি অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছি। তবে কীভাবে তিনি সেনাবাহিনীর অবসর ভাতা তুলছেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
তার শ্যালক সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একেএম সামসুদ্দিন শানু বলেন, তোফাজ্জেল আমার ভগ্নিপতি। যারা যাচাই-বাছাই করেছেন তারা বলতে পারবেন কীভাবে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন? তবে তিনি স্বীকার করেন যে, তার ভগ্নিপতি সেনাবাহিনীর চাকরি শেষে অবসর নিয়েছেন।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে তোফাজ্জেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।