আন্দোলনের মুখে কার্যালয় ছাড়লেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩৭ পিএম
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে তিন দিনের ছুটির আবেদনে স্বাক্ষর করে রোববার নিজ কার্যালয় ছাড়লেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম। এ ঘটনায় সরকারি দপ্তরসমূহে কর্মরতদের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় নতুন করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটের দিকে দলীয়করণ, ঘুস, দুর্নীতি, চাকরি বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে।
এ সময় জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন তারা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে জেলা প্রশাসক এসএম রফিকুল ইসলাম বাধ্য হয়ে তিন দিনের ছুটির দরখাস্তে স্বাক্ষর করে বেলা ২টার দিকে নিজ কার্যালয় ছেড়ে চলে যান। ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন এসএম রফিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মো. আতিকুল মামুন যুগান্তরকে বলেন, জেলা প্রশাসক তিন দিনের ছুটির আবেদন করেছেন। বিভাগীয় কমিশনার খুলনা কর্তৃক আবেদন মুঞ্জুর করার পর ছুটিতে যাবেন জেলা প্রশাসক (রফিকুল ইসলাম)। বর্তমানে বাংলোতে অবস্থান করছেন তিনি (ডিসি)।
পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করবেন কে? এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক বলেন, ছুটি মুঞ্জুর হলে কমিশনারের কার্যালয় খুলনা থেকে আদেশ জারি করা হবে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ছুটি মুঞ্জুর হওয়ার পরে স্টেশন ছেড়ে যাবেন ডিসি এসএম রফিকুল ইসলাম। নতুন জেলা প্রশাসক না আসা পর্যন্ত দায়িত্ব নেবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসক কার্যালয় ছাড়ার পরে শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে পুলিশ সুপার আজীম-উল-আহসানের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুল ইসলাম ও এসআই ফরিদ হোসেন ওরফে টাইগার ফরিদের অপসারণের দাবি তোলেন তারা। পুলিশ সুপার ওই দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এরপর আন্দোলনকারীরা ওই জায়গা থেকে চলে যান।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু হুরায়রা, সাইদুর রহমান, এলমা খাতুন, রত্না খাতুন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এসএম সোমেনুজ্জামান সোমেন, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মানিক, ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহমেদসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ জেলায় বছরের পর বছর কর্মরত থেকে যেসব পুলিশ সদস্য গ্রেফতার বাণিজ্য, ঘুস, দুর্নীতিবাজ, ক্রস ফায়ারের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে খ্যাত তারা গেল কয়েক দিনেই ভোল পাল্টে বিএনপিপন্থি হওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
চিহ্নিত ওই সব পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। একই সঙ্গে জেলা সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে নিষ্ঠাবান দায়িত্বপরায়ন পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতার আহবান জানানো হয়েছে।