Logo
Logo
×

সারাদেশ

গাজীপুরে উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া বনবিভাগের ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র

Icon

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৪৭ পিএম

গাজীপুরে উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া বনবিভাগের ১২টি আগ্নেয়াস্ত্র

গাজীপুরে বন দখল করে নির্বিঘ্নে বাড়িঘর, মার্কেট ও দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা গড়ে উঠছে। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে বনবিভাগের স্থানীয় বিট ও রেঞ্জ অফিসে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট এবং ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। 

এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি পক্ষ গাজীপুরে বনভূমি দখল করা শুরু করেছে। গত ৫ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত গাজীপুর জেলায় শত শত একর বনভূমি দখল হয়ে গেছে। কেটে ফেলা হয়েছে অগণিত শালবৃক্ষসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ঢাকা বন বিভাগের অধীন কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে শত শত জনতা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রসহকারে হামলা চালায়। 

কার্যালয়টিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে অস্ত্রাগার থেকে লুট করা হয় ৮টি চাইনিজ রাইফেল, ৪টি শর্টগানসহ ৭৫৫ রাউন্ড গুলি। 

এ সময় ওই কার্যালয়ে থাকা বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণপিটুনির শিকার হন। একপর্যায় রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে লুট করা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে উচ্ছৃঙ্খল জনতা রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয় ত্যাগ করে। 

একই দিন জেলার রাজেন্দ্রপুর, ভাওয়াল, শ্রীপুর ও কাচিঘাটা ফরেস্ট রেঞ্জের বিভিন্ন বিট অফিসে হামলা চালায় উচ্ছৃঙ্খল জনতা।

এদিকে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে গাজীপুরে অবাধে বনভূমি দখল হচ্ছে। জেলার থানাগুলোতে পুরোদমে পুলিশি কার্যক্রম শুরু হয়নি। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বনভূমি জবরদখল প্রতিরোধে যাওয়া বনকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে বনখেকোরা। গত মঙ্গলবার কালিয়াকৈর রেঞ্জের চন্দ্রা বিটে বন দখল প্রতিরোধ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ বন বিভাগের কর্মচারীরা। 

এছাড়া ভাওয়াল রেঞ্জের ভবানীপুর, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জের রাজেন্দ্রপুর পশ্চিম বিটসহ প্রতিটি বিটেই গত ৫ আগস্ট থেকে বনকর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গাজীপুরে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বনকর্মীরা। রেঞ্জ ও বিট অফিসগুলো লুটপাট, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ফলে দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে রয়েছে। লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলো গত ১০ দিনেও উদ্ধার না হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন বনকর্মীরা।

কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম জানান, লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অস্ত্র লুটের ঘটনায় বন্ধ থাকা কালিয়াকৈর থানার কার্যক্রম শুরু হলে গত ১৩ আগস্ট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাটের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাঠপর্যায়ে বন বিভাগের লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও তিনি জানান।

ভাওয়াল রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, বনভূমি জবরদখলের খবর পেয়ে প্রতিরোধ করতে গেলে শত শত উচ্ছৃঙ্খল জনতা বনকর্মীদের অবরুদ্ধ করে এবং বনকর্মীদের ওপর হামলা করে।

সহকারী বন সংরক্ষক রেজাউল আলম বলেন, মাঠপর্যায়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বন বিভাগের কর্মরতরা। টহল কার্যক্রমে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও পিকআপ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে হেঁটে টহল করতে গেলে বনভূমি জবরদখলকারীরা ধাওয়া দিচ্ছে বনকর্মীদের। এভাবে চলতে থাকলে বনকর্মীদের ওপর যেকোনো সময় বড় ধরনের হামলা হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম