কারাগার থেকে লুট হওয়া রাইফেল উদ্ধারে মামলা
শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
শেরপুর জেলা কারাগার থেকে লুট হওয়া কারারক্ষীদের ব্যবহৃত ৭টি চাইনিজ রাইফেল ও শর্টগান উদ্ধার করা হয়েছে।
গত শুক্রবার ৯ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার পর্যন্ত এই পাঁচ দিনে বিভিন্ন স্থান থেকে ওই উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো সেনাবাহিনী শেরপুর জেলা কারাগারের জেল সুপারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এদিকে জেলা কারাগারে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় জেলার লিপি রানী সাহা বাদী হয়ে ১০ থেকে ১২ হাজার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে গত ১১ আগস্ট সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খান মঙ্গলবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী অসহযোগ আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর পেয়ে শেরপুর শহরে আনন্দ মিছিল শুরু হয়। এরপর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিপুলসংখ্যক দুর্বৃত্ত জেলা কারাগারের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে।
এ সময় কারাগারে থাকা ৫২৭ জন বন্দি পালিয়ে যায় এবং ৯টি অস্ত্র লুট হয়। পরে শেরপুর সেনা ক্যাম্পের পক্ষ থেকে অস্ত্র জমা দেওয়ার অনুরোধ করার পর বিভিন্ন স্থান থেকে জেলা কারগারের লুট হয়ে যাওয়া ৯টি অস্ত্রের মধ্যে ৭টি উদ্ধার হয়।
কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর খান আরও জানান, জেলা কারগার সংস্কার করার জন্য শেরপুর গণপূর্ত বিভাগ বলা হয়েছে। এছাড়া আসামি ও কয়েদিদের ব্যবহার্য থালা-বাটি-কম্বলসহ লুট হয়ে যাওয়া অন্যান্য মালামাল বরাদ্দ চেয়ে সরকারের কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে শেরপুর গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, জেলা কারাগার সংস্কারের প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণের কাজ চলছে। জেলা কারাগার সংস্কারের জন্য আনুমানিক ১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কারাগারে হাজতি ও কয়েদিদের থাকার সেলগুলো আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করা সম্ভব বলে তিনি জানান। যেহেতু প্রশাসনিক ভবন, কারারক্ষীদের ব্যারাক, জেলারের বাসভবন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলো সংস্কার করতে ১৫ দিনের মতো সময় লাগবে বলেও তিনি জানান।
জানা গেছে, শেরপুর সেনা ক্যাম্পের পক্ষ থেকে অস্ত্র জমা দেওয়ার অনুরোধ করার পর শেরপুর শহরের খোয়ারপাড় এলাকার এক যুবক দুটি রাইফেল ও একটি ছুরি রাস্তায় পায়। পরে স্থানীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করে গতকাল সোমবার রাতে শেরপুর সেনা ক্যাম্পে এসে অস্ত্রগুলো জমা প্রদান করে।
অপরদিকে জেলা আনসার ভিডিপির সদস্যরা ১০ আগস্ট শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ গেটের পাশে ময়লা আবর্জনার স্তূপ থেকে বস্থায় মোড়ানো অবস্থায় একটি অস্ত্র পড়ে রয়েছে- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে একটি চাইনিজ রাইফেল উদ্ধার করে। পরে ১১ আগস্ট রোববার দুপুরে উদ্ধারকৃত রাইফেলটি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।