Logo
Logo
×

সারাদেশ

২৭ আগস্ট বিয়ের কথা ছিল গুলিতে নিহত সুজনের

Icon

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম

২৭ আগস্ট বিয়ের কথা ছিল গুলিতে নিহত সুজনের

২৭ আগস্ট বিয়ে করার কথা ছিল তরুণ ইঞ্জিনিয়ার সুজন মাহমুদের (৩৪)। তার আগেই গত ৫ আগস্ট ঢাকার মিরপুরে পুলিশ ও ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। যার ফলে বিয়ের পিড়িতে বসা হলো না সুজনের। অনেক স্বপ্ন বুকে নিয়ে অকালেই ঝরে গেল একটি তাজা প্রাণ।

নিহত সুজন মাহমুদ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের রূপপুর নতুনপাড়া মহল্লার মৃত আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ মাস্টারের ছোট ছেলে।  

গত ৬ আগস্ট সকালে রূপপুরের বাসায় নিহত সুজনের বোন রাবেয়া খাতুন বিলাপ করে বলছিলেন, কি দোষ ছিল আমার ভাইয়ের, তাকে কেনো নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে মারা হলো? এই বলে বার বার সে মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। 

এ সময় বাড়িভর্তি স্বজনদের আহাজারি ও কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। শোকে স্তব্ধ সন্তানহারা মা শামছুন্নাহার বেগম। সন্তানের জন্য বার বার ডুকরে কেঁদে উঠছেন আর আল্লাহর কাছে বিচার চাইছেন। এ সময় তিনি ক্ষিণকণ্ঠে বার বার বলছিলেন, আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দাও। কি দোষ ছিল তার। সে তো কোনো অন্যায় করেনি। তাহলে তার প্রাণ কেনো এভাবে কেড়ে নেওয়া হলো।

এ বিষয়ে নিহত সুজনের মেজ ভাই সুলতান মাহমুদ বলেন, বিএসসি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে সুজন মাহমুদ ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মিরপুর-৬ এ ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৫ আগস্ট বিকালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে মিরপুর-২ এর দিকে যান। সেখানে পুলিশ ও ছাত্র-জনতার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন সুজন। তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

তিনি আরও বলেন, রাতেই তার লাশ শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের রতনকান্দি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার সকালে বাদলবাড়ি শাহ হাবিবুল্লাহ (র.)-এর মাজার প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পাশের কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই শাহীন উদ্দিন বলেন, আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। সুষ্ঠ্য ও নিরোপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিকে খুজে বের করে তাকে সর্বচ্চ শাস্তি দিতে হবে।

অপরদিকে গত ৫ আগস্ট দুপুরে গাজীপুরের শফিপুর আনসার অ্যাকাডেমিতে সংঘর্ষের সময় আনসার ও ছাত্র-জনতার মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন একই উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের কৈজুরি গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে আব্দুল আলিম অন্তর (২২)। তিনি শাহজাদপুর সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। 

জানা গেছে, অন্তর লেখাপড়ার পাশাপাশি শফিপুর এলাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। খবর পেয়ে তার স্বজনেরা কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এদিন রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। 

গত মঙ্গলবার সকালে কৈজুরি মাদ্রাসা মাঠে তার জানাজার নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তার এই অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম