৩ শিশুসন্তান নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে ছাবিনার
কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১১ পিএম
চার মাসের শিশুসহ তিন সন্তান নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে গুলিতে নিহত আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্ত্রী ছাবিনার। রাতে বাবা বলে চিৎকার দিয়ে উঠে ছয় বছরের ছেলে শেখ সাদি। আর প্রতিবন্ধী মেয়ে সাদিয়া আক্তারের (১০) কান্না যেন থামছেই না। শেখ ফরিদ নামে রয়েছে ছাবিনার চার মাসের আরেক ছেলে। বড় ছেলে শেখ সাদি বাড়িতে কেউ এলেই মোবাইল নিয়ে ছুটে তার বাবার ছবি দেখাতে। তার বিশ্বাস বাবা আবারও তাদের মাঝে ফিরে আসবে।
শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে ছাবিনার সঙ্গে কথা হয় যুগান্তর প্রতিবেদকের। এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী কী দোষ করেছিল। এমন নির্মমভাবে গুলি করে তাকে মারতে হলো। এখন এতিম শিশু সন্তানদের নিয়ে কার কাছে, কোথায় যাব?
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন ছাবিনার স্বামী আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৫)। পরে ঢাকায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। গত ৬ আগস্ট বিকাল ৫টায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা সদরের বটতলা গ্রামে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে বিয়ে হয় পোগলা ইউনিয়নের পাবই গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে ছাবিনা আক্তারের। দাম্পত্য জীবনে তাদের তিন সন্তান রয়েছে। এক দশক আগে অভাবের কারণে আবদুল্লাহ আল মামুন স্ত্রীকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ চলে যান। সেখানে একটি সোয়েটার কোম্পানিতে কাজ করতেন মামুন। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন মামুন। ঢাকায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ আগস্ট বিকাল ৫টায় তিনি মারা যান।
এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন অন্যতম। তার আত্মত্যাগের প্রতিদান তখই দেওয়া হবে যখন আমরা হিন্দু-মুসলিম, গারো-হাজং অর্থাৎ সব ধর্মীয় ব্যবধান এবং দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে একটা সহনশীল এবং সবার জন্য বসবাসযোগ্য সমাজ গড়ে তুলতে পারব।