বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ যুবদল নেতা আবু রায়হান রাহিম (৩১) মারা গেছেন। চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার সকালে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দুপচাঁচিয়া থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা জানান, গত ৪ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আন্দোলনকারীরা দুপচাঁচিয়া জে কে কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছলে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা যোগ দেন। তারা অস্থায়ী পুলিশ বক্স ও আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেন। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে মারধর ও বাড়িঘরে হামলা করে। বাধা দিলে তারা পুলিশের ওপর আক্রমণ চালান। এরপর তারা দুপচাঁচিয়া থানা আক্রমণ করেন।
এ সময় স্থানীয় যুবদল নেতা ও গৃহনির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য এবং উপজেলার চকসুখানগাড়ি এলাকার মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে আবু রায়হান রাহিম পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নেন। আত্মরক্ষা ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এরপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে গেলে পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে কাহালু উপজেলার বরিনকেদার মন্ডলপাড়ার মুনিরুল ইসলাম মুনির (২২) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
এছাড়া দুপায়ে গুলিবিদ্ধ আবু রায়হান রাহিমসহ আহত ১০ জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাহিমকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার ডান পা কেটে ফেলতে হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে তিনি মারা যান।
দুপচাঁচিয়া থানার ওসি সনাতন চন্দ্র সরকার ও অন্যরা জানান, থানায় হামলার সময় আবু রায়হান রাহিম পুলিশের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়েছিলেন। অস্ত্র উদ্ধার ও জানমাল রক্ষায় পুলিশের গুলিতে তিনি গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
দুপচাঁচিয়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর ইউনুস আলী মহলদার মানিক জানান, রাহিম স্থানীয় যুবদল নেতা। বিকাল ৫টার দিকে দুপচাঁচিয়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।