গুলিতে নিহত রাকিবের মায়ের আহাজারি, ‘আমার সংসার চালাবে কে’
ফতুল্লা (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫০ পিএম
নিহত রাকিব হোসেনের বাবা-মা। ছবি-যুগান্তর
কোটা আন্দোলনে গুলিতে নিহত গার্মেন্টস শ্রমিক রাকিবের মা রাশিদা বেগমের আহাজারি থামছে না। রাকিবের বন্ধুদের দেখলেই জড়িয়ে ধরে বিলাপ করে বলেন, আমার সংসার চালাবে কে, আমার তো কেউ খবর নেয় না।
মঙ্গলবার বিকালে ফতুল্লার দাপা এলাকায় রাকিবের বাসায় গিয়ে এমন করুণ অবস্থা দেখা যায়। রাকিবের মা রাশিদা বেগম বলেন, আমার বাবা রাকিব মাত্র ১৯ বছর বয়সে সংসারের হাল ধরেছে। গার্মেন্টসে কাজ করে আমাদের পরিবারের চারজনের খাবারের ব্যবস্থা করতো সে। কাজের পাশাপাশি অবসর সময়ে ভালো ফুটবলও খেলত রাকিব।
ফুটবল খেলে অনেক পুরুস্কারও ঘরে এনেছেন। আমারে ঘরে এখন রাকিব নেই কিন্তু তার খেলাধূলার পুরুস্কার গুলো রয়েছে সুকেস ভর্তি। আমার ছেলেটার সাথে পরিবারের সবার বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক ছিল।
রাকিবের বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, ২১ জুলাই কোটা আন্দোলনে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় গুলিতে নিহত হয় রাকিব। আমাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার বানারিপাড়া থানার জুব্বদি গ্রামে তাকে দাফন করা হয়েছে। রাকিব ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীতে এএমএস নামে একটি গার্মেন্টসে ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাটিং সেকশনে কাজ করত। তার বেতনের টাকায় ঘর ভাড়া আর বাজার সদাই করতাম।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ২০ বছর যাবত ফতুল্লার দাপা এলাকায় বরকত মেম্বারের বাড়িতে ভাড়া থাকি। বড় মেয়ে সাথীকে বিয়ে দিয়েছি। মেয়ের ছোট প্রতিবন্ধি ছেলে শাকিল বাড়ির কাছেই একটি হার্ডওয়ারের দোকানে ৩হাজার টাকা বেতনে কাজ করেন। সবার ছোট রাকিব।
শাকিল বলেন, পাশের বাড়ির খালা দোকানে এসে আমাকে জানায় রাকিব গুলিতে আহত হইছে খানপুর হাসপাতালে আছে। তখন বড় বোন জামাই মনির হোসেনকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। সেখান থেকে চিকিৎসক আমাকে বলেন তোমার ভাইয়ের মাথায় গুলি লেগেছে। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাও। তখন একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা নেয়ার পথে রাকিব মারা যায়। এ সময় তাকে ঢাকা মেডিকেলে না নিয়ে সরাসরি গ্রামের বাড়ি নিয়ে দাফন করি।