Logo
Logo
×

সারাদেশ

বরিশালে আ.লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা

Icon

বরিশাল ব্যুরো

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২৪, ০৮:৪৭ পিএম

বরিশালে আ.লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা, প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা

বরিশালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের ধাওয়া-পালটা ধাওয়া, সংঘর্ষে টুটুল চৌধুরী নামে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতা নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে শত শত রাউন্ড টিয়ারশেল, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। প্রতিরোধে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে আন্দোলনকারীরা। 

এ সময় বরিশাল সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের বিভাগীয় কার্যালয়সহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি-প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও পঞ্চাশটির বেশি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। 

রোববার সকাল থেকেই নগরসংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। দুপুরে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালালে শুরু হয় দুইপক্ষের সংঘর্ষ। সংঘর্ষের মধ্যে ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি টুটুল বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তাকে ধরে গণপিটুনি দেয় আন্দোলনকারীরা। পরে শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। 

বিক্ষোভকারীদের প্রতিরোধের মুখে আওয়ামী লীগ কর্মীরা পিছু হটলে অদূরে নবগ্রাম রোড ও বটতলা এলাকায় থাকা কর্নেল জাহিদ ফারুক শামিম এমপির বাসভবন ও দুদক কার্যালয়ে হামলা চালায় বিক্ষুব্ধরা। প্রতিমন্ত্রীর বাড়ি লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি তার বাড়ির সামনে থাকা ২৫/৩০টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। হামলায় অবরুদ্ধ হয়ে অফিস ভবনের ৪ তলার ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেয় দুদক কর্মকর্তারা। 

সংঘর্ষের এ পর্যায়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে শুরু হয় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের তুমুল সংঘর্ষ। টিয়ারশেল রাবার বুলেটের মুখে শিক্ষার্থীরা খানিকটা পিছু হটলে ছাদে আটকা পড়া দুদক কর্মকর্তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। সন্ধ্যা ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই এলাকায় সংঘর্ষ চলছিল। এ সময় সিএন্ডবি রোড এলাকায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একটি অফিস ভাংচুর করে আন্দোলনকারীরা।        

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপ ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয় সদর রোডে। মহড়া দেওয়ার একপর্যায়ে সেখানে থাকা বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং আগুন জ্বালিয়ে দেয়। অফিসের সামনে থাকা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চলাকালে পুরো সদর রোডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 

দোকান প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে যে যার মতো নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায় সদর রোড এলাকার ব্যবসায়ীসহ সেখানে থাকা সাধারণ জনতা। সন্ধ্যা ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সদর রোড এলাকায় অবস্থান নিয়ে ছিল সাবেক মেয়র সাদেক আব্দুল্লাহর অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

এসব বিষয়ে জানতে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে কল দিলেও তারা কেউ ফোন ধরেনি। সিএন্ডবি রোড এবং চৌমাথা ছাড়াও নগরের আরো বেশ কয়েকটি এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া সংঘর্ষ হয়েছে আওয়ামী লীগ এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে। এসব ঘটনায় বেশ কিছু মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি ভাংচুর করা হয়।  

এছাড়া বেলা ১১টার দিকে নগরীর বিএম কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল সংলগ্ন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অবরোধ করে। তখন ওই স্থানে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আসলে তাদের বেধড়ক মারধর করে আন্দোলনকারীরা। এতে একজন কনস্টেবলের মাথা ফেটে যায়, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ সময় বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি দেখলেই ধাওয়া দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। একই সময়ে আমতলা মোড়ে অবস্থান নেয় বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সংঘর্ষে এক আওয়ামী লীগ নেতা মারা গেছেন। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত বলবেন বলে জানান তিনি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম