Logo
Logo
×

সারাদেশ

ফরিদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ, আহত ১৫

Icon

ফরিদপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০৩ পিএম

ফরিদপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ, আহত ১৫

ফরিদপুরে পূর্বঘোষিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। 

শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে শহরের গোয়ালচামট পুরাতন বাসষ্টান্ড ও ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় সাংবাদিক, পুলিশ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। 

এর আগে শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে বিক্ষোভের ডাক দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল থেকেই ওই এলাকায় আওয়ামী লীগ ও শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নেন। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও অবস্থান নেয়।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হন। এসময় সেখানে আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করে সমবেত হন। সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দিয়ে শহরের গোয়ালচামট পুরাতন বাসষ্টান্ড হয়ে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় গোয়ালচামট মডেল মসজিদের সামনে ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং আন্দোলনকারীদের থামানোর চেষ্টা করে। 

এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রাবার বুলেট, টিয়ারসেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া শুরু করে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল মারতে শুরু করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে লাঠিসোটা ও পাইপ হাতে শ্রমিকলীগ কর্মীরা ইটপাটকেল মারতে শুরু করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাজোয়া যান এগিয়ে যেতে দেখা যায়। তখন সেখানে রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। প্রায় আধা ঘণ্টা ধাওয়া পাল্টাধাওয়া চলে। পরে পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিয়ে পশ্চিম খাবাসপুর এলাকায় গিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা মেডিকেল কলেজ এলাকায় ঢুকে পড়ে। সেখানেও তাদের বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা নিরস্ত্র ছিলেন। স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে সামনে এগোনোর সময় প্রথমে আওয়ামী লীগের লোকেরা হামলা করে। এসময় তারা রাস্তার পাশে ইট-পাটকেল দিয়ে তাদের প্রতিরোধ করেন। এসময় তারা পালিয়ে গেলে ভাঙ্গা রাস্তার মোড় থেকে পুলিশ তাদের দিকে প্রথমে টিয়ারসেল এবং পরে রাবার বুলেট ছোড়ে। 

এসময় লাঠি-সোটা ও পাইপ হাতে পুলিশের সাথে কয়েকজন আমাদের উপর হামলা চালায়। এছাড়া আমাদের মিছিলের পেছন দিক থেকে কয়েকজন লাঠিসোটা হাতে শিক্ষার্থীদের হামলা করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের নাম পরিচয় বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে সাংবাদিকসহ কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আহত আন্দোলনকারী আহাদুজ্জামান বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলটি ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ে অবস্থান করতে চাইলে পুলিশ ও ছাত্রলীগ আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমরা অনেকেই আহত হই। এখন পর্যন্ত ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন সঞ্জয় বৈরাগী নামে এক নার্সিং শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শরীরে ১৮টি রাবার বুলেটের আঘাত রয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স। 

আহত ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমি বিক্ষোভে গিয়েছিলাম। মিছিলটি ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ের দিকে গেলে পুলিশের পাশ থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন ইটপাটকেল মারতে শুরু করে। এরপরই পুলিশ মুহুর্মুহু গুলি ছুড়তে শুরু করে। আমার শরীরে ১৮টি রাবার বুলেটের আঘাত রয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আজকের পত্রিকার ফরিদপুর প্রতিনিধি শ্রাবণ হাসান, দৈনিক ফতেহাবাদের জাকির হোসেন ও ঢাকা পোস্টের ফরিদপুর প্রতিনিধি জহির উদ্দিনসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান বলেন, আহত হয়েছে শুনেছি। কত রাউন্ড গুলি বা টিয়ারসেল নিক্ষেপ হয়েছে তার তথ্য এখনই বলা সম্ভব না।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম