পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া বাঁশখালীর সেই চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর সম্পদ জব্দের নির্দেশ
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৪, ০৭:৪৭ পিএম
পিটার হাসকে হত্যার হুমকিদাতা চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী সাহেদা বেগমের অবৈধভাবে অর্জিত স্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।গত ২৫ জুলাই মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছার আদালত এ আদেশ দেন।
তবে বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে গত ১৫ জুলাই এই দম্পতির অবৈধভাবে অর্জিত সব স্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধের আদেশ চেয়ে দুদকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক ও তার স্ত্রী সাহেদা বেগমের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–২ এর সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মুজিবুল হক জ্ঞাত-আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫৬ লাখ ৭১ হাজার ১৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। তিনি ১৯৯২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রবাসে থাকলেও দেশে টাকা পাঠানোর কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। অপর মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মুজিবুল হকের স্ত্রী সাহেদা বেগম জ্ঞাত-আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৭ টাকার সম্পদ উপার্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। এ মামলায় মুজিবুল হককেও আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার এবং তার স্ত্রীর সম্পদ জব্দের কোনো কাগজপত্র তিনি এখনো পাননি। ইতোমধ্যে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও পত্রিকার মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছেন। আদালতের কাগজপত্র পেলে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে মুজিবুল হক চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেন। ওই সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, পিটার হাস বলছেন- এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। পিটার হাস আমরা আপনাকে ভয় পাই না। আমরা মোটা চালের ভাত খাই। আপনি বিএনপির ভগবান; কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ ইমান বেচি না। আপনাকে এমন মারা মারব, বাঙালি কত দুষ্টু তখন বুঝতে পারবেন।
এর আগে ২০২২ সালের ২৮ মে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় নির্বাচনি পথসভায় ইভিএম নিয়ে মুজিবুলের বিতর্কিত মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় হ্যান্ডমাইকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রিকশায় করে বা যেভাবে পারেন এসে ভোট দিন। কারণ ইভিএমে ভোট হবে। ইভিএম না হলে সব সিল আমিই মেরে দিতাম, কাউকে খুঁজতাম না। কথা বোঝেননি, ইভিএমে আইডি কার্ড না ঢুকালে ভোট হয় না। হলে ভোট আমি রাতেই নিয়ে নিতাম। তাই আপনাদের কষ্ট করে সেটি (জাতীয় পরিচয়পত্র) নিয়ে যেতে হবে। ওই সময় এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি।