ঢাকায় লালমোহনের সাতজন নিহত
টাকার অভাবে লাশ গ্রামে নিতে পারেনি হাবিবের পরিবার
লালমোহন (ভোলা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৪ এএম
নিহত আকতার হোসেনের বাবা-মা এবং আরিফের ছবি হাতে বাবা মো. ইউসুফ। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ১৯ জুলাই ও এর পরবর্তী কয়েকদিনের সংঘাতে ভোলার লালমোহনের সাতজন নিহত হয়েছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম মাহ্বুব-উল-লালম। তবে নিহতদের কেউই আন্দোলনকারী ছিল না বলে দাবি পরিবারের। হতদরিদ্র এসব পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে এখন তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
নিহতদের মধ্যে উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চাঁদপুর গ্রামের শেকান্তর মুন্সিবাড়ির ছেলে আরিফ যাত্রাবাড়ীর একটি হোটেলে কাজ করতেন। তাকে হারিয়ে বৃদ্ধ বাবা চোখে অন্ধকার দেখছেন। উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ কালমা এলাকার হমজুউদ্দিন বাড়ির বজলুর রহমান ব্যাপারীর ছেলে আকতার হোসেনও (৩৫) ঢাকায় গুলিতে নিহত হয়েছেন। ঢাকার মোহাম্মদপুরে ১৫ বছর ধরে ভাড়া নিয়ে তিনি অটোরিকশা চালাতেন। ১৯ জুলাই অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা যান। এখন পুত্রবধূ এবং দুই নাতি-নাতনির কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত আকতারের দিনমজুর বাবা বজলুর রহমান।
এছাড়া এ উপজেলার নিহত আরও পাঁচজনের মধ্যে রয়েছেন রামপুরায় মোসলেহ উদ্দিন (৪০), শনির আখড়ায় মো. হাবিব (৪০), যাত্রাবাড়ীতে হাফেজ মো. শাহাবুদ্দিন (৩৫), শাকিল (২০) এবং মো. সাইদুল (১২)। তাদের মধ্যে মোসলেহউদ্দিন রামপুরার একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। তিনি উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙাশিয়া এলাকার মো. হানিফের ছেলে। এছাড়া শনির আখড়ায় নিহত হাবিব পেশায় ছিলেন প্রাইভেটকারচালক। তিনি লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চরমোল্লাজির মো. শফিউল্যাহর ছেলে। টাকার অভাবে তার লাশ এলাকায় নিতে পারেনি পরিবার। তাই হাবিবের লাশ ঢাকার জুরাইনে দাফন করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীতে নিহত হাফেজ মো. শাহাবুদ্দিনও একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। তিনি লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের লেজছকিনা এলাকার রদ্দিবাড়ির মো. খলিলের ছেলে। এছাড়া শাকিল ও সাইদুল পেশায় ছিলেন হোটেল কর্মচারী। তাদের মধ্যে শাকিল লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের কাজিরাবাদ এলাকার মৃত দলিল উদ্দিনের ছেলে এবং সাইদুল কালমা ইউনিয়নের লেজছকিনার মো. আকবর হোসেনের ছেলে।
লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাহবুব-উল-আলম বলেন, ঢাকায় সংঘর্ষে এ উপজেলার মোট সাতজন নিহত হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা তাদের তথ্য সংগ্রহ করেছি। এখনো তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।