Logo
Logo
×

সারাদেশ

মাদক দিয়ে এক ব্যক্তিকে ফাঁসানোর অভিযোগ, ১৪ দিনেও তদন্ত শেষ হয়নি

Icon

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৯ পিএম

মাদক দিয়ে এক ব্যক্তিকে ফাঁসানোর অভিযোগ, ১৪ দিনেও তদন্ত শেষ হয়নি

ঈশ্বরদী উপজেলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মোটরসাইকেলের বক্সে মাদক রেখে একজন নিরীহ চাকরিজীবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ তদন্ত করতে ৭ কার্যদিবস সময় বেঁধে দিয়ে পাবনার পুলিশ সুপার আ. আহাদ দায়িত্ব দেন ঈশ্বরদী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামীকে। ১৪ দিনেও এ ঘটনার তদন্ত শেষ হয়নি। অথচ মিথ্যা অভিযোগে ভুক্তভোগী ২০ দিন জেল খেটেছেন। 

শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে অভিযুক্ত কান্তি কুমার মোদকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটি মিথ্যা। পুলিশ সুপার মহোদয় তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন ঈশ্বরদী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মহোদয়কে। 

এ ব্যাপারে শুক্রবার এএসপি বিপ্লব কুমারকে মোবাইলে কল দিলে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমাদের ইন্টারনাল ব্যাপার’। ঘটনা তো একজন পাবলিককে নিয়ে। তাহলে এটা ইন্টারনাল কী করে হলো? জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘তদন্ত এখনো চলমান আছে। ফলে সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করতে পারছি না’। 

জানা গেছে, ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জমা দেয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে ১৪ দিনেও তা সম্পন্ন হয়নি। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। 

এর আগে গত ১৬ জুলাই বিকালে ঈশ্বরদীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী কামরুল হাসান জানান, গত ২০ এপ্রিল ঘটনার দিন দুপুরে ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া নতুন গোলচত্বর মোড়ের সুজন মেকারের দোকানে মেরামতের জন্য রাখা কোম্পানির দুটি গাড়ির কাছে নিজের মোটরসাইকেল রেখে অফিসের গাড়িতে করে কাজে চলে যান। 

বেশ কিছুক্ষণ পর কোম্পানির গাড়িচালক রাহাত আলীর মোবাইল ফোন থেকে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই জিয়াউর হক জানান, তার রেখে যাওয়া মোটর সাইকেলটিতে মাদক আছে, তাই তল্লাশি করা হবে। তাকে এখানে আসতে হবে। এরপর তিনি ঘটনাস্থলে চলে আসেন। পরে গাড়ি থেকে দুই পাতা হেরোইন ও ৬ পিচ ইয়াবা পাওয়া গেছে জানিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মামলা না দেওয়ার শর্ত দিয়ে বিনিময়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কান্তি কুমার মোদক। তখন কামরুলের বড় ভাই মাসুদ রানা গরু বিক্রি করে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে রইন ওয়ার্ল্ডের সাপ্লাইয়ার অর্ক কোম্পানির ম্যানেজার মিলন মালিথার মাধ্যমে এসআই কান্তি কুমার মোদককে সেই টাকা দেন। এরপরও গাড়ির সাইড কভারে পাওয়া ইয়াবা ও হেরোইন তার শরীর থেকে উদ্ধার হয়েছে উল্লেখ করে মাদক মামলা দিয়ে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তিনি ২০ দিন জেলে ছিলেন।
 
দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ও ইউপি সদস্য আব্দুল বিশ্বাস জানান, কামরুলের পরিবারকে অনেক আগে থেকেই দেখে আসছি। তারা সবাই কঠোর পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের দ্বারা মাদক সেবন, কিংবা ক্রয়-বিক্রয় সম্ভব বলে মনে হয় না। তাকে কোনো কারণে ফাঁসানো হয়ে থাকতে পারে। 

ঘটনার সময়ে উপস্থিত থাকায় মামলার প্রধান সাক্ষী রইন ওয়ার্ল্ড কোম্পানির গাড়িচালক রাহাত আলী জানান, দুই পুরিয়া হেরোইন ও ৬ পিস ইয়াবা এএসআই জিয়াউর হক পার্কিং করে রাখা ওই মোটরসাইকেলের সাইড কভার থেকে উদ্ধার করেন। আর মামলায় দেখিয়েছে সেগুলো কামরুলের শরীর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত হয়ে থাকতে পারে। 

পাবনা পুলিশ সুপার আ. আহাদ জানান, ভুক্তভোগী কামরুল হাসান লিখিতভাবে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই কান্তি কুমার মোদক ও এএসআই জিয়াউর হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। 

অভিযোগটি তদন্তের জন্য ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম