Logo
Logo
×

সারাদেশ

অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত মেঘনা উপকূল

Icon

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৫ এএম

অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত মেঘনা উপকূল

পূর্ণিমার প্রভাবে মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে রায়পুরে মেঘনা উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় সাত ফুট বেশি জোয়ারে নদী এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার দূরের লোকালয় পর্যন্ত প্লাবিত হয়।

বুধবার (২৪ জুলাই) বিকাল ৩টা থেকে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাটায় নামতে শুরু করে জোয়ারের পানি। রায়পুর উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ এবং উত্তর চরআবাবিল ইউপির চরবংশী, চরকাছিয়া, চরজালিয়া, চরইন্দ্রুরিয়া, আলতাফ মাস্টার মাছঘাট ও সাজু মোল্লার মাছঘাট এলাকায় খোঁজ নিয়ে জোয়ারের বিষয়টি জানা গেছে। একইভাবে সোমবার ও মঙ্গলবার রায়পুরে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নদীসংলগ্ন রায়পুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। লোকালয়েও জোয়ারের পানিতে দেখা যায়৷ এতে রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি, ফসলি জমি ও কাঁচা-পাকা নিচু ঘরগুলো পানিতে তলিয়ে যায়।

এদিকে টানা তিন দিন জোয়ারে উপকূল প্লাবিত হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ জোয়ারে ক্ষেতের বীজতলা নষ্টসহ ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। হাঁস-মুরগিসহ গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়ছেন গৃহস্থরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মেঘনা নদীর চরভৈরবী থেকে রায়পুর ২০ কিলোমিটার তীররক্ষা বাঁধের কাজের প্রতিশ্রুতি দিলেও গত ২০ বছরেও কোনো খোঁজখবর নেই। এতে করে প্রায় ২০ কিলোমিটার অরক্ষিত উপকূলীয় এলাকা প্রতি বছরই জোয়ারে ভাসে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রিমাল এ উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছে। যার ক্ষতচিহ্ন এখনো উপকূলে দৃশ্যমান। এর মধ্যে পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত হয়ে ক্ষেতের বীজতলা নষ্ট ও পুকুরে চাষের মাছ ভেসে গেছে। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ হলে জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেতেন উপকূলের বাসিন্দারা।

চরকাছিয়া এলাকার বাসিন্দা আইয়ুব মাঝি, খুরশীদ ও মাহমুদ আলী এবং চরইন্দ্রুরিয়া গ্রামের লিটন মাঝি ও আবেদ আলী জানান, জোয়ারের পানিতে তাদের পুরো বাড়ি ডুবে ছিল। নিচু ঘরের ভেতরে পানি ঢুকেছে। সবাইকে চৌকি-খাটে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে ছিল। ক্ষেতে অনেকেই আমনের বীজতলা তৈরি করেছে। জোয়ারের পানিতে ডুবে সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। দিনে ও রাতে প্রতিদিন দুবার জোয়ার ওঠে। রাতের জোয়ারে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। খাঁচার ভেতরে থাকা অনেকে মুরগি পানিতে ডুবে মারা গেছে।

রায়পুরের এলকেএইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ও চরকাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, নদীর স্বাভাবিক জোয়ার উপকূলে প্রবেশ করে না। কিন্তু স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৭ ফুট বেশি জোয়ার ছিল। এতে নদী থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার পূর্বে লোকালয় পর্যন্ত তীব্র স্রোত নিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। প্রতি বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দিকে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢোকে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এ বছর অসময়ে (আগাম) জোয়ারের পানিতে উপকূল প্লাবিত হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম