আনারকন্যাকে টুকরা টুকরা করার হুমকি, যা বললেন ডরিন
যুগান্তর প্রতিবেদন ও কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৫০ পিএম
হত্যার শিকার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ-সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন ও কালীগঞ্জ পৌর মেয়র আশরাফুল আলমকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টায় ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানান মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
পোস্টে ডরিন লিখেছেন, ইমোতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মেয়র আশরাফুল আলমকে হত্যার হুমকি দিয়েছে সেই সঙ্গে আমাকেও। পৌরসভার মেয়র আশরাফুল যুগান্তরকে জানান, সোমবার রাতে তার ফোনে মেসেজ পাঠিয়ে তাকে ও ডরিনকে হত্যার এ হুমকি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে একটি অস্ত্রের ছবিও পাঠানো হয়।
এদিকে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গণমাধ্যমের সহায়তা চেয়েছেন ডরিন। প্রাণনাশের হুমকির মেসেজের একটি স্ক্রিনশট এসেছে যুগান্তরের হাতে। সেখানে লেখা আছে, ‘কিরে আশরাফুল, ভালো হলি না। আনারের মতো কি ডরিনের লাশটাও কিমা কিমা করতে চাস। তুইও ভালো হয়ে যা আর ডরিনরেও ভালো হতে বল। না হলে দুজনের লাশ কিমা কিমা করমু। কেউ বাদ যাবি না কিন্তু।’
এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন মেয়র আশরাফুল ও ডরিন। মেয়র আশরাফুল যুগান্তরকে বলেন, পাপ্পু নামের একটি ইমো আইডি থেকে সোমবার রাত ৯টা ৪৭ মিনিটে মেসেজ পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ইতোমধ্যে বলেছি। কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করার প্রক্রিয়া চলছে।
ডরিন বলেন, আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমি প্রচণ্ড ভয়ে আছি। যে ফোন নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে সেটির লোকেশন খুলনা দেখাচ্ছে।
জানা গেছে, মেয়র আশরাফুল নিহত এমপি আনারের ঘনিষ্ট। কলকাতায় আনার হত্যার শিকার হওয়ার পর থেকে খুনিদের বিচার দাবিতে সোচ্চার রয়েছেন তিনি। সম্প্রতি রাজধানীর প্রেস ক্লাবের সামনে নেতাকর্মীদের নিয়ে এমপি আনারের খুনিদের বিচার দাবিতে তিনি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
আর ডরিন এমপি আনার অপহরণ মামলার বাদী। আনার নিখোঁজের পর থেকেই তিনি সোচ্চার হয়েছেন। স্বরাষ্ট্র্রমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায়ের অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন তিনি। ফলে এ দুজনকে টার্গেট করা হচ্ছে বলে ধারণা স্বজনদের।
এদিকে ডরিন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, এমন বার্তা দিয়ে কী বোঝাতে চাইছে তারা? আমার বাবার হত্যায় জড়িতদের ফাঁসি চাই। কোনো আসামি যেন জামিন বা বের না হতে পারে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সেই সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ডিবির হস্তক্ষেপ কামনা করছি। যারা এ হত্যার হুমকি দিয়েছে অবিলম্বে তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউ টাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে ২২ মে। ওইদিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় আনারের মেয়ে ডরিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। এছাড়া ভারতে একটি হত্যা মামলা হয়। এ হত্যার ঘটনায় দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন বাংলাদেশে গ্রেফতার শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর, সেলেস্তি, ফয়সাল, মোস্তাফিজ, গ্যাস বাবু ও মিন্টু। ভারতে গ্রেফতার আছে সিয়াম ও কসাই জাহিদ।