বন্যার পানিতে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু
দেওয়ানগঞ্জে ত্রাণের জন্য বানভাসিদের ইউএনও অফিসে অবস্থান
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ১০:২২ পিএম
ছবি: যুগান্তর
তীব্র তাপপ্রবাহে দেওয়ানগঞ্জে ত্রাণের জন্য ৩ শতাধিক বানভাসি মানুষ ইউএনওর অফিসে অবস্থান নিয়েছেন। এদিকে বন্যার পানিতে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
চুকাইবাড়ী যমুনার তীরবর্তী দুর্গম চরাঞ্চল চর হলকা হাবড়াবাড়ীর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে মাদ্রাসাপড়ুয়া ইয়াছিন (৯) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বন্যার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হয়। ১৪ ঘণ্টা পর বুধবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।
বন্যার পানিতে চুকাইবাড়ী পৌরসভাসহ আশপাশের এলাকায় বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেন বানভাসি লোকজন। গত বৃহস্পতিবার তাদের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। গত ৭ দিনে তাদের মধ্যে আর কোনো কিছু বিতরণ না করায় অসুস্থ্, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের ৩ শতাধিক বানভাসি লোকজন ইউএনওর অফিসে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বন্যার পানি মাড়িয়ে বুধবার বেলা ১১টার দিকে ত্রাণের জন্য উপজেলা পরিষদ ভবনের নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্সের অফিস কক্ষসহ বারান্দায় ভিড় করেন। এদের মধ্যে বয়স্করা ক্লান্ত শরীর নিয়ে সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। সন্তান কোলে নিয়ে নারীরা গাদাগাদি করে বসে আছেন। অনেকেই ত্রাণের জন্য বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাদের রুমে ছোটাছুটি করছেন।
বুধবার দুপুর ১টার সময় উপজেলা পরিষদ ভবন ঘুরে ও বানভাসিদের সঙ্গে কথা হলে চুকাইবাড়ী গুচ্ছগ্রামের আছর উদ্দিন ও শিউলী জানান, বানের পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। ৯ দিন ধরে বাড়িঘর ছাড়া, রেলওয়ে স্কুলের আশ্রয়ণ কেন্দ্রে উঠেছি। সেখানেও পানি। উপজেলা থেকে মাত্র ১০ কেজি চাল দিছিল, সেগুলোও শেষ। কাম নাই কাজ নাই কি খেয়ে বাঁচুম। ১০ কেজি চালে কয়দিন চলে।
এ সময় পাশে থাকা মর্জিনা কেঁদে বলেন, বানের পানিতে ঘর ডুইবা আছে, কোনডা পাই নাই, কি কইরা খামু, তাই ইউএনও স্যারের কাছে আইছি।
ইউএনও অফিসের বারান্দায় চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম খানের সঙ্গে কথা হলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, যে ত্রাণ বরাদ্দ হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় একেবারে নগন্য। কিছু না থাকায় দুর্গতদের কাছে যেতে পারছি না।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম এই প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি তো রাইফেল ছাড়া পাহারাদার, ইউএনও স্যার বরাদ্দ দিলেই আমি কাজ করতে পারি’।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স যুগান্তরকে জানান, সবাইকে ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।