Logo
Logo
×

সারাদেশ

বরগুনা জেলা কারাগারের বেহাল দশা, নেই সংস্কারের উদ্যোগ

Icon

নুরুল আহাদ অনিক, বরগুনা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম

বরগুনা জেলা কারাগারের বেহাল দশা, নেই সংস্কারের উদ্যোগ

১৯৬৯ সালে নির্মাণ করা হয়েছে বরগুনা জেলা কারাগার। তবে প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছরের উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার না হওয়ায় মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে কারাগারটি। এতে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই বাস করছেন বন্দি ও দায়িত্বরত কারারক্ষীরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পাকিস্তান আমলে ১৯৬৯ সালে নির্মাণ করা হয় কারাগারটি। কিন্তু নির্মাণ হওয়ার পর থেকে তেমন কোনো সংস্কার করা হয়নি। বর্তমানে কারাগারটিতে প্রায় ৩০০ জন কারাবন্দি রয়েছেন। যদিও এর ধারণ ক্ষমতা ২০০ জনের। এছাড়া কারাগারটিতে নেই কোনো নিচু পেরিমিটার ওয়াল ও বাউন্ডারি ওয়াল। যার ফলে যে-কোনো সময় কারাবন্দি পালিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। 

সরজমিনে কারাগারের বাইরের ভবন ঘুরে দেখা যায়, কারাগারের মূল ভবন থেকে শুরু করে কারাবন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের ঘরে বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে বেরিয়ে গেছে রড। অধিকাংশ জায়গায় খসে পড়েছে পলেস্তারা। সবচেয়ে বেহাল দশায় খোদ কারারক্ষীদের বাসভবনগুলোর। জরাজীর্ণ এসব ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও পরিবার নিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের।   

বরগুনা কারাগার থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া একজন বলেন, কারাগারের সব নিয়মতান্ত্রিকভাবে চললেও অবকাঠামোগত অবস্থা খুবই খারাপ। বিশেষ করে কারাগারের হাসপাতাল, বিষখালী এবং পায়রা নামের ভবনগুলো অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ। একটু বাতাসেও থরথর করে কাঁপে ভবনগুলো। অন্যদিকে কিশোর ওয়ার্ডের অবস্থা আরও বেহাল। বৃষ্টি হলেই পানিতে ভেসে যায় মেঝে। উপায় না থাকায় এসব ভবনে থাকতে হচ্ছে বন্দিদের।

মো. হান্নান মিয়া নামের এক কারাবন্দির স্বজন বলেন, সাক্ষাতের ঘরটি বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে বেরিয়ে গেছে রড। যেকোনো সময় পলেস্তারা খুলে ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। এছাড়া দর্শনার্থীদের অপেক্ষার জন্যে গেটের বাইরে একটা টিনশেড ঘর আছে সেটার অবস্থাও করুণ। নেই ব্যবহার যোগ্য কোনো টয়লেট। তাই অতিদ্রুত এগুলোর মেরামত দাবি জানাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কারারক্ষী জানান, পুরোনো ভাঙাচুরা ভবনে কোনোরকম টিনের বেড়া বা পলিথিন দিয়ে পরিবার নিয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। কারাগারে শুধু নতুন একটি ভবন ছাড়া বাকি সব আবাসিক ভবনই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। মূল অফিস ভবনের ২য় তলায় জেল সুপারের বাসভবনের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে তাই বাধ্য হয়েই তিনি অন্য একটি কোয়াটারে থাকছেন। জেলার ও ডেপুটি জেলারের জন্যে নেই কোনো কোয়ার্টার। 

বরগুনা জেলা কারাগারের বেসরকারি কারাপরিদর্শক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব মৃধা যুগান্তরকে বলেন, ১৯৬৮ সালে নির্মাণের পর ১৯৬৯ সালে এটি চালু হয়। তখনকার সময়ে করা কারাবন্দিদের আটকে রাখার পেরিমিটার ওয়ালটিও অনেক নিচু। বন্দীদের ব্যারাক ভবনগুলো আলাদা করার জন্যে নেই কোনো আলাদা দেয়াল। এছাড়া ধারণ ক্ষমতার থেকেও বেশি বন্দী থাকায় পুরোনো ভবনে গাদাগাদি করে বন্দীদের থাকতে হয়। নতুন একটি কারাগার নির্মাণের জন্যে আমরা সুপারিশ করেছি।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কারাগারের সকল সমস্যার বিষয়ে আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। যাতে দ্রুতই এসব ভবন নতুন করে নির্মাণ করা যায়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম