দুবাইতে গাড়ি বিস্ফোরণ, দোহার নবাবগঞ্জের নিহতের বাড়িতে মাতম
যুগান্তর প্রতিবেদন, দোহার-নবাবগঞ্জ
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১১:০৫ পিএম
দুবাইতে গাড়ি বিস্ফোরণে ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ৫ জন নিহতদের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
সোমবার দুপুরে সরজমিন দেখা গেছে, নিহতদের বাড়িতে পরিবারের সদস্য আত্মীয়স্বজন এমনকি এলাকাবাসী শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছে। কারো সঙ্গে কথা বলার তেমন পরিবেশ পরিস্থিতি নেই।
নিহত তহিদুর ইসলাম রানার পিতা মো. লুৎফর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রানারা ২ ভাই। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে প্রবাস জীবনযাপন করছেন। একটানা ৫ বছর রয়েছেন তিনি। বিয়ে ঠিক হয়েছে। তার আসার কথা রয়েছে কিন্তু রানা আসবে তবে লাশ হয়ে; পিতা হিসেবে মেনে নেওয়া কতো কষ্টের কেঁদে উঠলেন তিনি।
৭ জুলাই সকালে নিজেই গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন দুবাইর আজমান শহরে। সেখানেই গাড়ি বিস্ফোরণে নিজেসহ সহযোগী একই এলাকার আরও ৪ জন নিহত হয়।
একই গ্রামের নিহত রাজুর মায়ের আহাজারিতে সবার চোখে পানি চলে আসে। তিনি বারবার বলে যাচ্ছেন- ‘আমি কিছু বুঝি না আমার সোনা বাবু রাজুকে আমার কাছে এনে দাও। যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় এনে দাও। ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বৌমাকে কি জবাব দেব। কেমনে থাকব এই বৌকে নিয়ে। আমার বুকের ধন যে আমার আগেই চলে গেল কি নিয়ে থাকব।’ কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
নিহত রাশেদের মায়ের একই কান্না যেন থামছে না। রাশেদের দুই বোন এক ভাই। বোনদের বিয়ে এখন অনেকটা ঋণমুক্ত হয়েছে কিন্তু সুখের মুখ দেখার আগই চলে গেল বোন রাবিয়া কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পাঁচ বছরে সন্তান নিয়ে স্ত্রী নির্বাক কান্না করতে করতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে মুখে কোনো কথা বের হচ্ছিল না। শুধু বলল আমার স্বামী যেমন গেছে এমনই আমাকে ফিরিয়ে দাও। একমাত্র সন্তানটি আজও জানে না ওর বাবা আর কোনো দিন ওকে বাবা বলে ডাকবে না। সবার মুখের দিকে ফেল ফেল করে তাকিয়ে দেখছে। সবার সঙ্গে দেখা করতে ৩ মাস পর আসার কথা ছিল রাশেদের। তিনি আসবেন চিরদিনের জন্য লাশ হয়ে।
একই অবস্থা হিরা ও ইবাদুলের পরিবারের।
তারা দুবাইয়ের আজমান প্রদেশে থাকতেন। রোববার বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১০টায় কাজে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে নবাবগঞ্জের জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বালেঙ্গা গ্রামের ৪ জন ও দোহার উপজেলার দোহার বাজার এলাকার একজন।
নিহতরা হলেন- নবাবগঞ্জের বালেঙ্গা গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মো. রানা (৩০), আব্দুল হাকিমের ছেলে মো. রাশেদ (৩২), শেখ ইরশাদের ছেলে মো. রাজু (২৪) শেখ ইব্রাহীমের ছেলে ইবাদুল ইসলাম (৩৪) এবং দোহার বাজার এলাকার মো. মঞ্জুর ছেলে মো. হিরা মিয়া (২২)।