রাবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ১০:২৫ পিএম

রাবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ।ছবি: যুগান্তর
সরকারি চাকরিতে জারি করা ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল ও কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে রেললাইন অবরোধ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদ ভবন সংলগ্ন ফ্লাইওভার এলাকার রেললাইন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। পাঁচটি ট্রেন নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছাড়তে পারেনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘক্ষণ রেলপথ অবরোধ করে রাখেন। এতে পদ্মা, সাগরদাড়ি, কপোতাক্ষ, ধূমকেতু ও বরেন্দ্র এক্সপ্রেসের সিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে।
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্যারিস রোডে জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে একটি মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হল ও সড়ক প্রদক্ষিণ করে দুপুর ১২টায় কৃষি অনুষদ ভবনসংলগ্ন ফ্লাইওভার এলাকার রেললাইন অবরোধ করেন।
এর আগে দুই দিন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি গতকাল বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে সংস্কৃতি আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। আজ ৪ ঘণ্টা রেললাইন অবরোধ করে রাখেন তারা।
চারটি দাবি উত্থাপন করে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালের পরিপত্র বহালসাপেক্ষে কমিশন গঠন করে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার, কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধা কোটায় শূন্যপদ পূরণ, জীবদ্দশায় সব ধরনের সরকারি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় একবার কোটার ব্যবহার (এর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত), প্রতি জনশুমারির সঙ্গে অর্থনৈতিক সমীক্ষার মাধ্যমে বিদ্যমান কোটার পুনর্মূল্যায়ন নিশ্চিত এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা।
এছাড়া আন্দোলনকারীরা জানান, সারা দেশের কোটাবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তারা এক দফা দাবিতে একমত পোষণ করেছেন।
দাবিটি হলো- সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কোটাপদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক ও রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান বলেন, আমরা এর আগে চার দফা দাবিতে আন্দোলন করেছি; কিন্তু আজ থেকে চার দফা বাদ দিয়ে সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে এক দফা দাবিতে আমাদের সংগ্রাম চলবে। আমাদের দাবি একটাই- প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি নয়, সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাবীদের দ্বারা সেই পদ পূরণ করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে।
কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক রেজওয়ান গাজী মহারাজ বলেন, ‘আমরা আন্দোলনকারীরা আজকে সারা দেশে এক দফা দাবি জানিয়েছি। সেটা হলো- প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে শুধু কোটা পদ্ধতি সংস্কার নয়, বরং সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে।’